পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: বেহালার পর্ণশ্রীতে দুর্ঘটনায় আহত শিশুকন্যার অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাথা ও ঘাড়ের আঘাত গুরুতর। পরিবারের অনুমান, মেয়েকে নিয়ে লোফালুফি খেলতে গিয়ে ঘটে দুর্ঘটনা। চারতলার ছাদ থেকে পড়ে বাবার মৃত্যু হলেও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে মেয়ে।


কেটে গেছে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময়। এখনও মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে দুধের শিশু। শনিবারই বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে  স্থানান্তরিত করতে হয় একরত্তিকে। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, ট্রমা কেয়ারের রেড জোনে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছে শিশুটি। চিকিৎসকদের একটি দল তার স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখেছে। তার মাথার চোট গুরুতর। রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। ঘাড়েও গুরুতর আঘাত পেয়েছে সে। এছাড়া শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত রয়েছে। তবে চিকিৎসকদের দাবি, যে অবস্থায় শিশুটিকে শনিবার হাসপাতালে আনা হয়েছিল, উন্নতি না হলেও বড় কোনও অবনতি হয়নি তার।

শনিবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে বেহালার পর্ণশ্রীতে। পরিবারের অনুমান, চারতলার ছাদে ১ বছর ৩ মাসের  শিশুকন্যাকে নিয়ে লোফালুফি খেলছিলেন বাবা। আচমকাই বাবার হাত ফস্কে নীচে পড়ে যায় শিশুকন্যাটি। মেয়েকে বাঁচাতে ঝাঁপ দেন বাবা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ভিজিল্যান্স বিভাগের কর্মী বছর ৪৪-এর সুভাষচন্দ্র পাণ্ডার। খোঁজাখুঁজির পর দেখা যায়, ফ্ল্যাটের পাঁচিলের ওপারেই অন্য বাড়ির চত্বরে গাছের নীচে পড়ে শিশুকন্যা। গুরুতর আহত ওই একরত্তিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে।

শনিবারই বাড়ির ছাদে একটি প্লাস্টিকের বলের হদিশ পায় পুলিশ। বাবার সঙ্গে আর খেলা হবে না কখনও। তবে দ্রুত সব আশঙ্কা কাটিয়ে বাড়ি ফিরুক মেয়ে। সবার প্রার্থনা এখন একটাই।

গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়। প্রতিবেশীরা সকলেই এমন মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানতে পেরে শোকে কার্যত পাথর। অনেকেই বাকরুদ্ধ। শিশুকে নিয়ে এরকম খেলা যে প্রাণঘাতী হতে পারে, তা অনেকে ভাবতেও পারেননি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশের দল। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ওই পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে প্রতিবেশী, সকলেই প্রার্থনা করে চলেছে, একরত্তি ওই শিশুকন্যার যেন প্রাণ রক্ষা হয়। চিকিৎসকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকলেই চাইছেন, শিশুটি যেন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে। সে যেন নতুন করে জীবন শুরু করতে পারে।