কলকাতা: এবিপি আনন্দের একটাই চেষ্টা, আপনাদের এগিয়ে রাখা। লকডাউনেও আমরা বরাবরের মত আপনাদের পাশে থেকেছি, সবার আগে সব খবর পৌঁছে দিয়েছি আপনাদের কাছে। তবে শুধু আমরাই নই, আরও বিশেষ কিছু সংস্থা এই লকডাউন আমাদের কাছে সহজতর করে তুলেছিল। বিচ্ছিন্নতার কষ্ট পুরোপুরি বুঝিনি আমরা। চলুন এই সংস্থাগুলিকে চিনে নেওয়া যাক।


মাদার ডেয়ারি এবং আমুল


দুধ ও দুধ সম্পর্কিত প্রোডাক্টে দেশের সেরা দুই সংস্থা মাদার ডেয়ারি ও আমুল। লকডাউনে দেশের কোথাও যে দুধের অভাব হয়নি, তা এই দুই সংস্থার সৌজন্যে। প্রতিদিন ঠিক সময়ে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে টাটকা দুধ, দই, মাখন। দু’মাসের বেশি সময় ধরে চলেছে লকডাউন, একবারই ওই দুই কোম্পানির সাপ্লাই চেন ভাঙেনি।


 আমাজন


ই কমার্স সাইটগুলোর জন্য লকডাউন অত্যন্ত কঠিন সময় ছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঠিক হয়, জরুরি জিনিসপত্র ছাড়া আর সব জিনিস সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে। এত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা বন্ধ করেনি আমাজন। রেড জোন সহ সমস্ত জোনের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ডেলিভারি করে গিয়েছে তারা।



এয়ারটেল


লকডাউন আমাদের শেখাল, কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে প্রিয়জনদের থেকে নিজেকে গুটিয়ে এনে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যায়। এই প্রথম এত মানুষ এক সঙ্গে ওয়ার্ক ফ্রম হোম করলেন, আর সে জন্য সব থেকে জরুরি ছিল ইন্টারনেট। দেশের সব থেকে জনপ্রিয় সংস্থা এয়ারটেল বিষয়টি বুঝে, তাদের ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা বজায় রাখে। লকডাউনের সময় এয়ারটেল ইউজাররা আগে মতই কোনও রকম সমস্যা ছাড়াই টানা পরিষেবা পেয়েছেন।


লকডাউনে দোকানপসার বন্ধ ছিল, মোবাইল রিচার্জ করতে পারছিলেন না অনেকে। তাঁদের কথা ভেবে এয়ারটেল তাদের থ্যাঙ্কস অ্যাপে রিচার্জের ব্যবস্থা করে। লকডাউনে খোলা ছিল শুধু ওষুধের দোকান, পোস্ট অফিস, এটিএমের মত জরুরি পরিষেবা। আর এ সব জায়গা থেকেও এয়ারটেল রিচার্জ করা যেত। ফলে তাদের ইউজারদের লকডাউন চলাকালীন ফোন রিচার্জ করার কোনও সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি।


লকডাউনের সময় নতুন সিম নেওয়ার কোনও উপায় ছিল না। কিন্তু এয়ারটেল তাদের নতুন ইউজারদের কথাও ভেবেছে। যাঁরা নতুন সিম নিয়েছেন তাঁদের বাড়ি গিয়ে সিম পৌঁছে দিয়েছে তারা। একইভাবে লকডাউনেও তারা ঘরে ঘরে দিয়ে এসেছে ইন্টারনেট ও কেবল সংযোগ। শুধু পুরনো ইউজারদের জন্য নয়, নয়া ইউজাররাও পেয়েছেন নতুন করে ইন্টারনেট সংযোগের সুবিধে। আর এই সবই তারা করেছে কর্মীদের নিরাপত্তার কথা পুরোপুরি মাথায় রেখে। তাদের সব কর্মী-ইঞ্জিনিয়ার সেফটি গিয়ার ব্যবহার করেন যাতে কোনওভাবেই না করোনার সংস্পর্শে আসতে হয়।


আর্বান ক্ল্যাপ


লকডাউন যখন শুরু হয় তখন দেশে ঠিক গ্রীষ্ম পড়ছে। লকডাউনের ফলে লোকে এয়ার কন্ডিশনার সার্ভিস করাতে পারেননি। কিন্তু তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায় আর্বান ক্ল্যাপ। তাদের টেকনিশিয়ানরা বাড়ি বাড়ি পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন। আর আর্বান ক্ল্যাপ এই করোনা পরিস্থিতিতে তাঁদের নিরাপত্তায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিল।


জোমাটো আর সুইগি


লকডাউনে না ছিল ইচ্ছেমত বাজার করার সুবিধে, না আসছিলেন রান্নার লোক। ফলে সবাইকে হাত পুড়িয়ে রাঁধতে হচ্ছিল কিন্তু খাবারে বৈচিত্র্য ছিল না। এই পরিস্থিতিতে আমাদের পাশে দাঁড়ায় ফুড ডেলিভারি সংস্থা জোমাটো আর সুইগি। শুধু রেস্তোঁরা আর ডেলিভারি কর্মীদের নিরাপত্তা নয়, তাদের গ্রাহকরা যাতে কোনওরকম স্পর্শ ছাড়াই প্যাক করা খাবার পান, তা তারা নিশ্চিত করেছে।


অ্যাপোলো ফার্মেসি


লকডাউনের সময় যেটুকু ভিড় দেখা গিয়েছে তা ছিল ওষুধের দোকানগুলিতে। কিন্তু নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি- সবটাই মাথায় রাখে অ্যাপোলো ফার্মেসি। ওষুধের পাশাপাশি তারা সংগ্রহে রাখে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও গ্লাভস। সর্বাধিক মানুষের মধ্যে করোনা সম্পর্কে সচেতনতা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টায় ওষুধের সঙ্গে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ফ্রিতেও দিয়েছে তারা। ঠিকভাবে হাত ধোওয়ার পন্থা তারা জানিয়েছে প্রায় ১ কোটি মানুষকে।