কলকাতা:  কলকাতা: সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারিতে তৃণমূলের পাশে কংগ্রেস ও সিপিআই। বিজেপি-বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরাতে পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়ে মন্তব্য অধীর চৌধুরীর। গ্রেফতারির টাইমিং নিয়ে প্রশ্ন আছে, মন্তব্য ডি রাজার।
একসময় যে সারদা-রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিল প্রদেশ কংগ্রেস, সেই তারাই আজ দলের হাইকম্যান্ডের চাপে তৃণমূল সাংসদের গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার গন্ধ পাচ্ছে! এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, গ্রেফতারির সময়টা সন্দেহজনক। গোটা ভারতজুড়ে বিরোধীরা যখন এককাট্টা, তখন এই গ্রেফতারি ঐক্যে চিড় ধরাতে কি না, তা দেখতে হবে।
অথচ, মঙ্গলবার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর তো অন্য কথা বলেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি! বলেছিলেন, নিশ্চয় প্রমাণ আছে তাই সুদীপকে গ্রেফতার করেছে।
কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের চাপেই মমতার ঘোর বিরোধী বলে পরিচিত অধীর চৌধুরীর গলাতেও এখন সুদীপ ইস্যুতে উল্টোসুর বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, সুদীপের গ্রেফতারি ইস্যুতে ইতিমধ্যেই মমতার দলের পাশে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।
এআইসিসি-র পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সি পি জোশীও গ্রেফতারির সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন, সময়টা কীরকম? কোন সময়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে, সেটা ইম্পর্ট্যান্ট।
প্রসঙ্গত, বেআইনি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের আবেদনের ভিত্তিতেই দিয়েছিল। এদিন সেই জোশীকে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে এড়িয়ে যান। অন্যদিকে, মান্নান নিজে জানান, বেআইনি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ফলে ২ কোটি মানুষের ইস্যু। কিন্তু, নোট বাতিল ১২৫ কোটি মানুষের ইস্যু। ফলে, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে হবে।
শুধু কংগ্রেসই নয়। গ্রেফতারির সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিপিআই। সুদীপের গ্রেফতারি নিয়ে বাম শরিক সিপিআই-এর শীর্ষনেতা ডি রাজার মন্তব্য, গ্রেফতারির টাইমিং নিয়ে প্রশ্ন আছে। সিবিআই আগে কেন করল না? এখন কেন এই আগ্রাসী মনোভাব? কিন্তু, সিপিএম আবার গ্রেফতারির নেপথ্যে কোনও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখছে না। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, কিসের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। তাঁর আবার দাবি, এতদিন (বিজেপি-তৃণমূল) সেটিং চলছিল তাই গ্রেফতার করছিল না।
বিধানসভা ভোটে সিপিএমের সঙ্গে গাটছড়া বেধে লড়ার পর, এখন কংগ্রেসের তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, কংগ্রেসের আমলে নির্দেশ। বিধানসভা ভোটের আগে রাহুল রাজ্যে এসে সুর চড়িয়েছেন। সনিয়া গাঁধীর কাছে জানতে চাইছি, কংগ্রেসের অবস্থান কী?
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, কংগ্রেসের পাখির চোখ এখন ২০১৯-এর লোকসভা ভোট। আর দিল্লিতে মোদিকে কোণঠাসা করতে গেলে যে তৃণমূলকে পাশে প্রয়োজন, সেটা রাহুল-সনিয়া ভাল করেই জানেন। সে কারণেই সুদীপ ইস্যুতে দিল্লির চাপে অধীরদেরও এখন সুর বদল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।