কলকাতা: পঞ্চাশের দশক। আজাদ হিন্দ ফৌজ ঘিরে তখন দেশজুড়ে চরম উন্মাদনা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ইতিহাস বিভাগ ঠিক করে, আজাদ হিন্দ ফৌজের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় নিয়ে একটা প্রামাণ্য দলিল তৈরি করতে হবে। ঐতিহাসিক প্রতুল গুপ্তের নেতৃত্বে শুরু হয় গবেষণার কাজ। আড়াইশোর বেশি ব্রিটিশ নথি ঘেঁটে তৈরি হয় ঐতিহাসিক দলিল। যা আজও প্রকাশ্যে আসেনি। যে নথি সামনে আনতে এবার মামলা করতে চান তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তিনি জনস্বার্থ মামলা করবেন।

কেন এত বছর ধরে ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে নেতাজি-সংক্রান্ত গবেষণার নথি? সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, তথ্য জানার অধিকার আইনে, ২০১০ সালে এই নথি প্রকাশের দাবি জানান জনৈক চন্দ্রচূড় ঘোষ। এর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন আরটিআই কমিশনার। বলা হয়, গবেষণার স্বার্থে বই আকারে নথি প্রকাশ করা হোক। কিন্তু, তৎ‍কালীন দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে। আদালত অবশ্য আরটিআই কমিশনারের নির্দেশই বহাল রাখে। নির্দেশের বিরুদ্ধে ফের আপিল করে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন তৎ‍কালীন ইউপিএ সরকার।

এরপর, কেন্দ্রে ক্ষমতার পরিবর্তন। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের দাবি, নরেন্দ্র মোদীকে, সব তথ্য জানিয়ে নথি প্রকাশের জন্য চিঠি দেন তিনি। কিন্তু, এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি।

বিদেশ মন্ত্রকের একটি নোটকে হাতিয়ার করেই আইনি লড়াই চাইছেন সুখেন্দু শেখর রায়। কী সেই নোট? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদের দাবি, ২০১১ সালে বিদেশ মন্ত্রককে চিঠি দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জানতে চায়, নেতাজি সংক্রান্ত নথি সামনে এলে, তার প্রভাব কি কোনও দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে পড়তে পারে। বিদেশ মন্ত্রক জানায়, কোনও প্রভাবই পড়বে না। সঙ্গে তারা এও জানায়, নেতাজি সংক্রান্ত নথি প্রকাশ্যের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, পাণ্ডুলিপির ১৮৬ থেকে ১৯১ পাতা খতিয়ে দেখা হোক। যেখানে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে, এমন খবরকে খারিজ করে দিয়ে বলা হয়েছে, নেতাজি জীবিত অবস্থাতেই কোথাও চলে গিয়েছেন। ১৯৫৩ সালেও বিদেশ মন্ত্রক একই ভাবে এই মন্তব্যই করে।

এখন প্রশ্ন হল, শেষপর্যন্ত কি নেতাজি সংক্রান্ত এই সব নথি সামনে আসবে?