কলকাতা: টাকা আদায়ের মত অনৈতিক কাজ করা সামরিক বাহিনীর নীতি-বিরুদ্ধ। টোল প্লাজা বিতর্কে সোমবার ফের জানিয়ে দিল সেনাবাহিনী।
এদিন ‘বিজয় দিবস’-এর প্রাক্কালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সেনার মেজর জেনারেল জেনারেল স্টাফ (এমজিজিএস) আর নাগরাজ সাফ জানিয়ে দেন, এমন কোনও খবর (টাকা আদায়) বাহিনীর কাছে নেই। তিনি বলেন, সেনা হল অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ বাহিনী। এধরনের কাজ সেনা বরদাস্ত করে না। কারণ তা বাহিনীর নীতির পরিপন্থী।
সেনা মোতায়েন নিয়ে রাজ্য সরকার বাহিনীর মধ্যে যে উদ্ভূত জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে, এদিন তাও খারিজ করে দেন নাগরাজ। জানিয়ে দেন, কাজের ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সেনার সম্পর্কে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তাঁর মতে, স্থানীয় স্তরে দুই পক্ষের মধ্যে ভালই যোগাযোগ রয়েছে।
চলতি মাসের গোড়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন টোল প্লাজায় বিনা অনুমতিতে সেনা মোতায়েন করার অভিযোগ তোলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টিকে তিনি ‘অভ্যুত্থানের চেষ্টা’ বলেও উল্লেখ করেন।
এতে জল বহুদূর গড়ায়। বাহিনী প্রত্যাহার না হলে তিনি নবান্ন ছাড়বেন না বলেও ঘোষণা করেন। মমতার এই অভিযোগের জবাবে তীব্র কটাক্ষ করে কেন্দ্র। সেনার তরফেও পাল্টা জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য প্রশাসনকে অবগত করেই তারা গোটা প্রক্রিয়া চালিয়েছে।
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। গত সপ্তাহে মমতাকে চিঠি লিখে তাঁর অভিযোগের জন্য উষ্মাপ্রকাশ করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। তিনি জানান, রাজ্যের অভিযোগে তিনি ব্যথিত। পর্রীকর তাঁর চিঠিতে লেখেন, ভারতীয় সেনা দেশের সবথেকে শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। আপনার অভিযোগে সেনার মনোবলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
পর্রীকর যোগ করেন, আপনার মতো একজন মানুষের থেকে এটা কাঙ্খিত নয়। রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিকদের কাছে একে অপরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলাটা বিলাসিতা। কিন্তু, সেনার বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ তোলার আগে সকলের অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত।
চিঠির কড়া জবাব দেন মমতাও। জানিয়ে দেন, সেনার বিরুদ্ধে তাঁর কোনও মন্তব্য নেই। তিনি সেনাকে সম্মান করেন। কিন্তু, একইসঙ্গে কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে মমতার বলেন, এমন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কখনও দেখিনি, যেখানে সেনার পর মতো সম্মানীয় প্রতিষ্ঠানেরও অপব্যবহার করা হয়। রাজনীতিকদের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলার বিলাসিতা আপনার দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমরা সেই দলে পড়ি না।
এদিন মেজর জেনারেলের মন্তব্য রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যকার টানাপোড়েনে নতুন করে ইন্ধন জোগাবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।