সৌভিক মজুমদার,কলকাতা: ২৯ জানুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফলাইনে আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে মামলাকারি চাকরিপ্রার্থীদের। প্রাইমারি টেট মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। এর ফলে পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবেন কয়েক হাজার আবেদনকারী। টেট মামলায় হাসি ফুটল মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত শুধুমাত্র মামলাকারীদের আবেদনপত্র জমা নিতে হবে। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হয় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্দাজের এজলাসে।
আদালত সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের মে মাসে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঘোষণা করে প্রাইমারি টেট হবে। কিন্তু সেই পরীক্ষা হয়নি। ওই বছর অক্টোবরে ফের টেট-এর বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার জানায়, প্রথম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় প্রশিক্ষণরত কিছু ছাত্র পরীক্ষায় বসার অনুমতি চান। তাঁদেরকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার জন্যই এই বিজ্ঞপ্তি। তারপরেও পরীক্ষা হয়নি।
এরপর গত বছর ২৩ ডিসেম্বর আবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্য সরকার বলে, আগামী ৩১ জানুয়ারি প্রাথমিকের টেট হবে। সেই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে বেশ কিছু পরীক্ষার্থী কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনে তাঁরা বলেন, National Council for Teacher Education বা NCTE-র নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রতি বছর টেট নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু তা হয়নি। আগেই তাঁদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গিয়েছে, তাঁদেরকেও এবারের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হোক।
এরপরই বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্দাজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত শুধুমাত্র মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদের আবেদপত্র অফলাইনে জমা নিতে হবে।
আদালতের এই রায়ে উপকৃত হবেন মামলাকারী বেশ কয়েকহাজার চাকরিপ্রার্থী। অন্যদিকে, ৩১ জানুয়ারি টেট-এর দিন কোভিড গাইডলাইন মানা হবে কি না সন্দেহ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী ৷ সেই মামলায় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মহম্মদ নিজামুদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কোভিড গাইডলাইন মেনেই টেট নিতে হবে।
এদিকে ভোটের সময় যত এগিয়ে আসছে, বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের বিক্ষোভের পারদ ততই চড়ছে। বুধবার পার্শ্ব শিক্ষিকাদের বিধানসভা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাঁধে দুই শিক্ষিকা ভিভিআইপি গেটের মাথায় উঠে ব্যানার-পতাকা লাগিয়ে দেন।
তার একদিনের মাথায় নিজেদের একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে কলকাতার রাজপথে নামল প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এনে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শহিদ মিনার পর্যন্ত মিছিল করল উস্তি প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
উস্তি প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ জানান, ‘‘ আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু সরকার মানছে না। সরকার মানুক, তা আমরা চাই ৷’’
উস্তির প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনটির অভিযোগ, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে বাড়ানোর জন্য যে আদেশনামা সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে তা অযৌক্তিক এবং অপরিণামদর্শী ৷ এবং পঞ্চম বেতন কমিশনের উল্লেখিত নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো উত্তরণের যে পদ্ধতি তা উলঙ্ঘন করার ফলে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকারা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রবীণ শিক্ষকদের থেকে নবীন শিক্ষকদের বেতন বেশি হয়ে যাচ্ছে ৷ এর ফলে সিনিয়র শিক্ষকদের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে।