কলকাতা: বিরোধীদের তথ্য গোপনের অভিযোগ তো ছিলই। এবার ডেঙ্গি ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল কেন্দ্র। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের আইনজীবী দাবি করেন, রোগ প্রতিরোধে কেন্দ্রের দেওয়া টাকা খরচই করতে পারেনি রাজ্য সরকার। ডেঙ্গি সংক্রান্ত মামলায় কেন্দ্রের আইনজীবী এদিন দাবি করেন, রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে পতঙ্গবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য রাজ্যকে ১৯ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য খরচ করেছে মাত্র ৫ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা।


কেন্দ্রের আইনজীবী এদিন দাবি করেন, এই ১৯ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ খাতে দেওয়া হয় ২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। কিন্তু, তার মধ্যেও ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য খরচ করেছে মাত্র ৫ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ রক্ষার জন্য যে দেড় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল, তা-ও পুরোটা খরচ করতে পারেনি রাজ্য সরকার। তারা খরচ করেছে মাত্র ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা।

কেন্দ্রের আরও দাবি, পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের জন্য তারা যে ২৫ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল রাজ্যকে, তাতে তো হাতই পড়েনি। এই তথ্য সামনে আসতেই, তাকে হাতিয়ার করে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। যদিও, তৃণমূল সরকার এই অভিযোগ মানতে নারাজ।

এদিন হাইকোর্টে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে পাল্টা কয়েকটি অভিযোগ তোলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল। তিনি দাবি করেন, পতঙ্গবাহিত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য রাজ্য এখনও পর্যন্ত ৫৫ কোটি খরচ করেছে। এর মধ্যে কেন্দ্র দিয়েছে মাত্র ৯ কোটি টাকা। এছাড়া মশা মারার স্প্রে ও যন্ত্রাংশ কিনতেও রাজ্য খরচ করেছে ১ কোটি টাকা খরচ। কিন্তু, একথা শুনে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, আমার বাড়ির এলাকায় তো মশা মারার স্প্রে করা হয় না!

কেন্দ্র এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ তুলেছে। তাদের আইনজীবীর দাবি, পতঙ্গবাহিত রোগকে নোটিফায়েড ডিজিজ হিসেবে ঘোষণা করতে বলে রাজ্য সরকারকে দু’টি চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু, রাজ্যের তরফে কোনও উত্তর মেলেনি। পাল্টা অ্যাডভোকেট জেনারেল আবার কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলে দাবি করেন, রাজ্য এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি পরীক্ষার জন্য ২ হাজার ৩৪ টি অ্যালাইজা প্যাক ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে মাত্র ৫২৯টি প্যাক দিয়েছে কেন্দ্র। সবমিলিয়ে ডেঙ্গির চেহারা যখন ভয়ঙ্কর, তখন এবার নতুন ইস্যুতে নবান্নের সঙ্গে দিল্লির সংঘাত।