প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : করমণ্ডল বিপর্যয়ের ( Coromandel Accident ) তদন্তে এই প্রথম তল্লাশি অভিযান চালাল সিবিআই ( CBI )। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ওড়িশার বিভিন্ন জায়গা ও হুগলির ডানকুনি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে অভিযান চলে।


করমণ্ডল দুর্ঘটনায় সিবিআইয়ের স্ক্যানারে রেলের কর্মীরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ওড়িশার সোরো, কেন্দাপড়া, বাহানাগা বাজারে সিগন্যাল ও রিলে রুমের দায়িত্ব ছিল খড়গপুর ডিভিশনের সিগন্যাল বিভাগের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার আমির খানের ওপর।


সোরো থানার করমপুরে ভাড়া থাকতেন আমির। করমণ্ডল বিপর্যয়ের পর থেকেই তিনি পলাতক। তাঁর খোঁজেই গতকাল ডানকুনি ও পূর্ব মেদিনীপুরে অভিযান চালায় সিবিআই। 


অন্তর্ঘাত, না কি নিছকই ভুল? কারণ খুঁজতে 'করমণ্ডল ফাইলস' খুলল CBI। গত ৬ তারিখই, দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা! সেদিন সিবিআইয়ের ১০ জন অফিসারের টিম পৌঁছয় বাহানাগা বাজার স্টেশনে। দিল্লি থেকে আসেন জয়েন্ট ডিরেক্টর বিপ্লব চৌধুরী ও আরও ১ জন আধিকারিক। বাকি ৮ জন আধিকারিক যান ভুবনেশ্বর থেকে।  


সিবিআই আধিকারিকরা একে একে যান, বাহানাগা বাজার স্টেশন প্যানেল কন্ট্রোল রুম, পয়েন্ট নম্বর ১৭ এবং 
স্টেশন ম্যানেজারের ঘরে। শুক্রবার বাহানাগা স্টেশনে মর্নিং শিফটে কোন কর্মীরা ছিলেন? দুপুরের শিফটে কারা ছিলেন? দুর্ঘটনার দিন কারা ছুটিতে ছিলেন? দুর্ঘটনার আগে কোন কোন ট্রেন সেখান দিয়ে ক্রস করেছিল? মেন লাইনে সিগন্যাল সবুজ থাকলেও, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের লুপ লাইনে ঢোকার নেপথ্য়ে কী রহস্য়? কারা থাকতে পারে এর পেছনে?
সমস্ত তথ্য জানতে খোজঁ খবর শুরু করেছে সিবিআই। স্টেশন চত্বরে যে কোনও সিসি ক্য়ামেরা নেই, সেই বিষয়টিও নজরে আসে তাদের। 


এরইমধ্য়ে রেল দুর্ঘটনার তদন্তে সিবিআই কেন এই প্রশ্নে রাজনৈতিক তর্কবিতর্ক জোরদার হয়। প্রথমে সিবিআই তদন্ত নিয়ে সুর চড়া করলেও,  কটকে সুর কিছুটা নরম করেন মুখ্য়মন্ত্রী। ট্রেন দুর্ঘটনার পরই এফআইআর দায়ের করেছিল বালেশ্বর জিআরপি। সেই এফআইআরের প্রেক্ষিতেই আলাদা করে মামলা রুজু করেছে সিবিআই।  


করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার কারণ কী? সেই উত্তর কি লুকিয়ে রয়েছে স্টেশনের রিলে রুমে? বর্তমান প্রযুক্তিতে সিগন্য়াল এবং পয়েন্ট পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বিশেষজ্ঞদের মতে, একমাত্র রিলে রুম থেকেই সিগন্য়াল এবং পয়েন্টের এই সমন্বয় বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব। বাহানাগা বাজারেও কি তাই হয়েছিল? তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।