কলকাতা: G-20 শীর্ষ সম্মেলন (G 20 Summit) উপলক্ষে দেশের রাজধানী শহর যখন সেজে উঠেছে, উত্তর-পূর্ব প্রান্তে তখনও অশান্তির চোরাস্রোত। পরিস্থিতি এমনই যে শনিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী (Manipur CM N Biren Singh) এন বীরেন সিংহ স্বয়ং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর (Central Security Force) 'অযাচিত পদক্ষেপের' সমালোচনা করেন। বৈঠকের আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার, ফের তেতে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। ৩ জনের মৃত্যু হয়, ৫০ জন জখমও হন তাতে। তার পরই শনিবারের মন্ত্রিসভার বৈঠক।
বৈঠকে যা নিয়ে আলোচনা...
সংঘর্ষবিধ্বস্ত মণিপুরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বৈঠকে কথা হয়েছে বলে খবর। বিতর্কিত 'আফস্পা' আইনের আওতায় 'উপদ্রুত এলাকা'-র মেয়াদ আরও ছ'মাস বাড়ানো হবে কিনা, এই বিষয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে। 'আফস্পা'-র ফলে 'উপদ্রুত এলাকা'-য় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী বিশেষ কিছু ক্ষমতা পেয়ে থাকে। এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই দীর্ঘ ১৬ বছর অনশন চালিয়েছিলেন ইরম শর্মিলা চানু। তবে ২০২২ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেন, উত্তর-পূর্বে যে ভাবে শান্তি ফিরেছে তাতে মণিপুর, নাগাল্য়ান্ড, অসমে 'আফস্পা' এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার পরিধি কমানো হবে। গত বেশ কয়েক মাসে যে ভাবে সংঘর্ষ চলছে, তাতে কি সেই ছবিটা ফের বদলাতে পারে মণিপুরে? গত কালের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে সেই নিয়ে, এমনই খবর সূত্রে।
আর যা...
পাশাপাশি সংঘর্ষে ভিটেহারা বাসিন্দাদের জন্য পাকা বাড়ি তৈরির প্রকল্পেও একই বৈঠকে অনুমোদন দেয় এন বীরেন সিংহের মন্ত্রিসভা। যেখানে পরিস্থিতি অনুকূল, সেখানে বাসিন্দাদের তাঁদের নিজেদের জায়গাতেই বাড়ি বানিয়ে দেবে সরকার। প্রথম পর্যায়ে অন্তত ১ হাজার বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জন্য আনুমানিক খরচ ধার্য হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রতি পাকা বাড়ি তৈরির জন্য ১০ লক্ষ টাকা, প্রতি সেমি পার্মানেন্ট বাড়ির জন্য ৭ লক্ষ এবং প্রতি অস্থায়ী বাড়ির জন্য ৫ লক্ষ টাকা খরচ ধার্য করেছে সরকার। দু'ধাপে এই টাকা দেওয়া হবে। নির্মাণের আগে ৫০ শতাংশ টাকা পাওয়া যাবে। বাকি টাকা মিলবে পরে। তা ছাড়া, যৌন হেনস্থা ও অন্যান্য নির্যাতনের শিকার মহিলাদের জন্যও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে মণিপুর সরকার।
সরকারি হিসেবে, গত চার মাস ধরে যে সংঘর্ষের আগুনে মণিপুর জ্বলছে তাতে এখনও পর্যন্ত ১৭০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, জখম ৭০০। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৭০ হাজারেরও বেশি গৃহহীন। ৪ হাজার ৮০০-এর কাছাকাছি বাড়ি হয় জ্বলেপুড়ে ছাই হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত।
আরও পড়ুন:মহাত্মাকে নিবেদন করা পুষ্পস্তবকেও দেশের নাম শুধু ভারত লেখা হল, রাজঘাট থেকেও বার্তা মোদির!