নয়াদিল্লি: পঙ্গপালের উপদ্রবে জেরবার পাকিস্তান। তাই  তাদের এই বিপর্যয়ের সময়ে এগিয়ে এল শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা – সব মরশুমের বন্ধু রাষ্ট্র চিন।


খবরে প্রকাশ, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে ১ লক্ষ সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিন। তবে, এই সেনা মানুষের নয়, হংসের!


বেশ কিছুদিন ধরেই পঙ্গপালের ঝাঁক হানা দিয়েছে পাকিস্তানে। মূলত, পূর্ব আফ্রিকা থেকেই ওই পঙ্গপালের পাল হানা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাকিস্তানে ওই পঙ্গপালের ঝাঁক একরের পর একর জমির শস্য নষ্ট করে ফেলছে।


পরিস্থিতি এতই জটিল আকার ধারণ করেছে যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এই হানাকে গত ২ দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ উল্লেখ করে সাহায্যের জন্য চিনের দ্বারস্থ হয়েছেন। পাকিস্তানের এই বিপদের দিনে তাদের ফেরাতে পারেনি বন্ধু চিন।


জানা গিয়েছে, পঙ্গপালের হানা সামলাতে বিশেষ 'শৃঙ্খলাপরায়ণ' হাঁসগুলিকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং। বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই হাঁসের প্রজাতি মূলত পূর্ব চিনের ঝেজিয়াং প্রদেশ থেকে পাঠানো হবে। তবে, পূর্ণবয়স্ক নয়, হাঁসের ছানাকেই পাঠানো হবে বলে খবর।


আপাতত, ঠিক হয়েছে ১ লক্ষ হাঁসছানার এই সৈন্যকে পাঠানো হবে। পঙ্গপালের হানায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধ, বালোচিস্তান ও পঞ্জাব প্রদেশ। ইতিমধ্যেই, চিনা কৃষি ও গ্রামীণ মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন।


কিন্তু, কেন হাঁস পাঠানো হচ্ছে? বা এই প্রজাতির হাঁসের বিশেষত্বই বা কী? চিনা বিষেশজ্ঞ লিউ লিঝি জানান, দুদশক আগে, ঠিক এরকম পঙ্গপালের হানায় জেরবার হয়েছিল চিন। সেই সময় এই বিশেষ প্রজাতির হাঁস দিয়ে তার মোকাবিলা করা হয়েছিল।


লিউয়ের মতে, হাঁসের ব্য়বহার মুরগির তুলনায় সাশ্রয়কর এবং এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। পাশাপাশি, কীটনাশক ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। ফলত, পরিবেশ ও ফসলের প্রাকৃতিক গুণমান রক্ষা পায়।


লিউ জানান, হাঁস সর্বদা একটা জটলায় থাকে। এদের সামলানো অত্যন্ত সহজ। সবচেয়ে বড় কথা, একটা মুরগি একদিন গড়ে ৭০টা পঙ্গপাল খেতে পারে। সেখানে একটা হাঁসের ক্ষমতা ২০০। অর্থাৎ, প্রায় তিনগুন মারণ ক্ষমতা।


এখানেই শেষ নয়। এই হাঁসগুলি প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিস্থিতিতেও স্বচ্ছন্দে জীবিত থাকতে পারে। পাখি বা ব্য়াঙের তুলনায় এরা অনে বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ। এই হাঁসের প্রজাতি পঙ্গপালের তুখোড় শিকারী বলেই পরিচিত।


লিউ শেষে যোগ করেন, একবার পঙ্গপালের সমস্যা মিটে গেলে, পরবর্তীকালে, এই হাঁসগুলিকে খাওয়া যায়। তিনি বলেন, এই প্রজাতির হাঁসের মাংস অত্যন্ত নরম এবং সুস্বাদুও বটে।