মান্দসৌর: প্রেম কোনও ভাষা জানে না। প্রেম কোনও সীমানা মানে না। প্রেম যে জাতি ও ধর্মের ঊর্ধ্বে, তা ফের প্রমাণিত হল। আর তা সাতপাকে বাঁধা পড়ে প্রমাণ করলেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা সত্যর্থ মিশ্র ও চিনা নাগরিক জি হাও।
বছর পাঁচেক আগে কানাডার শেরিডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়ে সত্যর্থর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল হাও-এর। প্রথমে বন্ধুত্ব। সেখান থেকে প্রণয়। অবশেষে নিজেদের প্রেমকে পরিনয়ের মাধ্যমে পরিণতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দুজনই। নিজেদের পরিবারকে মানাতে হয়েছে। অবশেষে রবিবার, ভারতীয় শাস্ত্রমতে চারহাত এক হল সত্যর্থ ও জি-এর।
এর জন্য, সুদূর চিন থেকে গত ২৯ তারিখ ভারতে আসেন চিনা তরুণী। সত্যর্থর বাড়ি মন্দসৌরে। সেখানেই সত্যর্থর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন জি। এর আগে, শনিবার দুজনের একটি বাগদানের অনুষ্ঠানও হয়। উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনেরা। এই বিয়ে নিয়ে বেশ উৎসাহিত ছিলেন সত্যর্থ ও জি। শনিবারের অনুষ্ঠানে ভারতীয় সঙ্গীতের তালে নাচতেও দেখা যায় যুগলকে।
দুই পরিবারের মধ্যে জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি, রীতি ও প্রথার বিস্তর ফারাক। কিন্তু, তা সত্ত্বেও বিয়েতে দেখা য়ায় উভয় পরিবারের সদস্যদের একে অপরের সঙ্গে দারুণভাবে মিলেমিশে গিয়েছেন। সকলেই বিয়েতে দারুন আনন্দ উপভোগ করেছেন। বাদ যাননি সত্যর্থর বন্ধুরাও। তাঁরাও এই বিয়ে নিয়ে যথেষ্ট উৎসাহিত ছিলেন।
সত্যর্থ জানান, উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে, এনগেজমেন্ট ও বিয়ে দুটিই-- ভারতীয় মতে ভারতেই হবে। চিনেও একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, করোনাভাইরাস প্রকোপের কারণে, সেই পরিকল্পনা আপাতত স্থগিত। অন্যদিকে জি হাও জানান, ভারত সুন্দর দেশ, এখানকার মানুষ সুন্দর, এখানকার খাবারও দারুন। তিনি ভারতকে ভীষণ রঙীন ও দুর্দান্ত হিসেবে বর্ণনা করেন। ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে নববধূ জানান, দুদেশের সংস্কৃতির মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকলেও, কোথাও একটা মিলও রয়েছে।
সত্যর্থর মা জ্যোতিদেবী ছেলের বিয়ে নিয়ে ভীষণই উৎফুল্ল। জানান, ২০১৬ সালে কানাডা থেকে ছেলে ফেরার পরই তিনি দুজনের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। পরে, দুই পরিবার মিলে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জানান, তাঁর চিনা কুটুম্বরা এখানে ভারতীয় সংস্কৃতি ও রীতি ভীষণ আগ্রহের সঙ্গে দেখেছেন। শীঘ্রই, কানাডায় ফিরে যাবে নব-দম্পতি। এরপর চিনে ফিরবে জি হাও-এর পরিবার।