চট্টগ্রাম: নতুন বছরেও জামিন পেলেন না সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। চট্টগ্রাম আদালত ফের তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল। একমাসেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতার মামলা দায়ের হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী যুক্তি দেন, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়। এর পর কী করে জামিন মঞ্জুর করা সম্ভব? (Chinmoy Krishna Das)


চিন্ময়কৃষ্ণর আইনজীবী অপূর্ব ভট্টাচার্য এবিপি আনন্দ-কে জানিয়েছেন, এবার তাঁরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করার পরিকল্পনা করছেন। বৃহস্পতিবার জামিন আবেদনের শুনানি হয় চট্টগ্রাম নগর দায়রা আদালতে। আধঘণ্টা ধরে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে জামিন-আবেদন খারিজের নির্দেশ দেন বিচারক। শুনানি শেষে পুলিশি নিরাপত্তায় আদালত ছাড়েন অপূর্ব ভট্টাচার্যর নেতৃত্বে সন্ন্যাসীর ১১ জন আইনজীবী। (Bangladesh News)


বৃহস্পতিবার সকালে চিন্মকৃষ্ণের জামিনের আবেদনের শুনানি করেন দায়রা বিচারক মহম্মদ সইফুল ইসলাম। চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবীরা জানান, সন্ন্যাসী সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাঁকে অন্যায় ভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এদিন সশরীরে আদালতে উপস্থিত হননি চিন্ময়কৃষ্ণ। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালেতর শুনানিতে হাজিরা দেন তিনি। 


চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দিন চৌধুরী সংবাদনমাধ্যমে বলেন, "জামিনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের তরফে আপত্তি জানানো হয়। বলা হয়, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। এর সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। আদালত জামিন মঞ্জুর করেনি। তবে উচ্চ আদালতে আবেদনের সুযোগ রয়েছে।"


এর আগে, গত ২৬ নভেম্বরও চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় চট্টগ্রাম আদালতে। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার হন বাংলাদেশ সম্মলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়। সেই নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন অব্যাহত। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়েছে। এদিন শুনানি চলাকালীন আদালত চত্বরে শোনা গেল ভারত বিরোধী স্লোগানও। 


চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের শুনানি ঘিরে আজ আদালত চত্বরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আইনজীবী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারি ছাড়া কাউকে আদালতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। সেই থেকে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে। সেই নিয়েই সভা-সমাবেশ করছিলেন চিন্ময়কৃষ্ণ। তেমনই এক সমাবেশে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা ওড়ানোর অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে ২৫ অক্টোবর, ৩০ অক্টোবর রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের হয়। ২৫ নভেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথমে আটক করা হয় তাঁকে। পরে গ্রেফতার করা হয়।