মুম্বই: চলে গেলেন সরোজ খান। গোটা বলিউড যাঁকে ডাকতো ‘মাস্টারজি’ নামেই।


শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত মাসে মুম্বইয়ের গুরু নানক হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শুক্রবার সকালে সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। প্রবাদ প্রতিম এই কোরিওগ্রাফারের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান টিনসেল টাউন। হিন্দি ছায়াছবিতে ২ হাজারেরও বেশি সংখ্যক গানের নৃত্য পরিচালনা করেছিলেন সরোজ। তাঁর পরিচালনায় সুপার-ডুপার হিট নাচগুলির বেশিরভাগই পর্দায় পরিবেশন করেছিলেন দুই নৃত্যপটিয়সী নায়িকা শ্রীদেবী এবং মাধুরী দীক্ষিত।

গত ১৭ জুন মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে। করোনা-র নানা উপসর্গের সঙ্গে মিল পাওয়া যাওয়ায় তাঁর কোভিড টেস্টও করা হয়।রেজাল্ট অবশ্য নেগেটিভ আসে। এদিন রাত আড়াইটে নাগাদ সরোজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ভাইপো মণীশ জগওয়ানি।সরোজ রেখে গেলেন স্বামী, দুই কন্যা ও এক পুত্রকে।

সরোজ খানের জন্ম ১৯৪৮ সালে। মাত্র তিন বছর বয়সে শিশুলিল্পী হিসেবে তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন। পাঁচের দশকের শেষ দিক থেকেই তিনি বি সোহনলালের সঙ্গে ব্যাক-আপ ডান্সার হিসেবে কাজ শুরু করে দেন। নিজে পূর্ণাঙ্গ নৃত্য পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন ‘গীতা মেরা নাম’ ছবি থেকে। সেটা ১৯৭৪ সাল। ধীরে ধীরে ছবির জগতে কোরিওগ্রাফার হিসেবে তাঁর পায়ের তলার জমি শক্ত হতে থাকে। আট ও নয়ের দশকে শ্রীদেবী ও মাধুরীর সঙ্গে তাঁর কোরিওগ্রাফি সরোজকে একটা আলাদা উচ্চতায় নিয়ে যায়। মিস্টার ইন্ডিয়া, নাগিনা, চাঁদনী, তেজাব, থানেদার-এর মতো ছবিগুলোর নাচের সিকোয়েন্স ভোলাই সম্ভব নয়। ছবির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে নাচ।অনেক পরে ২০১৮ সালে মাধুরীর সঙ্গে শেষবার কাজ করেন কলঙ্ক ছবিতে। দেবদাস, জব উই মেট, তামিল ছবি শৃঙ্গারাম-এর জন্য সেরা কোরিওগ্রাফার হিসেবে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছেন সরোজ।২০০৫-১০ সাল পর্যন্ত বহু রিয়্যালিটি শোয়ে বিচারক হিসেবেও থেকেছেন সরোজ। সে সব শো-ও তো অসম্পূর্ণ তাঁর পরিচালনা করা নাচগুলো ছাড়া। হাওয়া হাওয়াই, তাম্মা তাম্মা, এক দো তিন, ডোলা রো ডোলা, ধক ধক করনে লাগা, ইয়ে ইসক হায়-এর মতো গানগুলোয় মন কেড়ে নেওয়া নৃত্যবিভঙ্গ কে ভুলতে পারেন। চলে গেলেন সরোজ। রয়ে গেল সেইসব নাচ!