বীরভূম: বিধানসভা ভোটের আগে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধানে’র মতো কর্মসূচি নিয়েছে তাঁর সরকার। আর বুধবার বোলপুরের প্রত্যন্ত আদিবাসী গ্রামে পৌঁছে গেলেন খোদ মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।  স্থানীয় মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনলেন, রান্নাতেও হাত লাগালেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন কলকাতা ফেরার সময় আচমকাই আদিবাসী অধ্যুষিত বল্লভপুরডাঙা ও সরকারডাঙা গ্রামে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। ধুলোমাখা পথে দাঁড়িয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে শোনেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ, সমস্যার কথা।  কলেজ ছাত্রী টুম্পা সোরেনের কাঁধে হাত রেখে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীকে হাতের সামনে পেয়ে দৈনন্দিন জীবনের হাজারো সমস্যা তুলে ধরেন তাঁরা।


তাঁদেরই একজন বল্লভপুরডাঙা গ্রামের সোনামনি সোরেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সোনামনির দাবি, একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। একটা বাড়ি চাই।  তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ভরসা পেয়েছেন। তাঁর কথায় শোনা গেল সেই সুর। বললেন, দিদি বলল, বাড়িটা করে দেবে। লিখিত দিতে বলল। তবে না হলে আবার বলব, দিদি তো আবার আসবে, কোনওদিন কোনও মুখ্যমন্ত্রী আসেনি! গ্রামের বাসিন্দা কলেজছাত্রী টুম্পা জানান, আমাদের স্নান করার জায়গা নেই, পুকুরে গেলে সমস্যা হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি সেটা।

গ্রামবাসীদের অভাব-অভিযোগ শুনে বীরভূমের জেলাশাসককে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। খোঁজ করেন অনুব্রত মণ্ডলেরও। জেলাশাসকের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়,  তুমি আমার ইনস্ট্রাকশন মানছ না, এরা কেন এগুলি পায়নি। সেইসঙ্গে বলেন, অনুব্রত কোথায়? তোমাকেও এগুলি দেখতে হবে। বল্লভপুরডাঙা থেকে পাশের সরকারডাঙা গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে চলতে চলতে আচমকা একটি চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন। চা খান। রান্নাতেও হাত লাগান। এরপর হেলিকপ্টারে চড়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে রাজ্যে ক্ষমতা দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে  বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডারা বারবার রাজ্যে প্রচারে আসছেন। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও আসছেন বলে জানিয়েছে বিজেপি। তার মধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর মতো পশ্চিম মেদিনীপুরের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। গত সপ্তাহেই অমিত শাহ দুদিনের রাজ্যে সফরে বোলপুরে রোড শো করেছেন অমিত শাহ। পাল্টা গতকাল সেখানে পদযাত্রায়   নামেন মমতা।