হাওড়া : জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সম্ভাবনাতেই সিলমোহর। দিল্লিসফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আগামী বুধবার আলোচনায় বসবেন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। সোমবার দুপুরে দিল্লির (New Delhi) উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে নবান্নের (Nabanna) বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই যে খবরে সিলমোহর দিয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিএসএফ (BSF) প্রসঙ্গে আলোচনার জন্যই তিনি দেখা করতে যাচ্ছেন। গত জুলাইয়ে দিল্লি সফরে গিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন তিনি।


সম্প্রতি ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে সীমান্তে ৫০ কিলোমিটার এলাকাকে বিএসএফের কার্যকলাপের এক্তিয়ারে এনেছে কেন্দ্র সরকার। আর যার পর থেকেই তা নিয়ে সরব রাজ্য। কেন্দ্রের নির্দেশের পরই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে যে প্রসঙ্গে চিঠিও লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যে বিধানসভায় বিএসএফের এক্তিয়ার বিরোধী বিলও পাশ করেছে রাজ্য। যা নিয়ে কার্যত উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ও বিরোধী বিজেপির মধ্যে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি রওনা হওয়ার আগে জানিয়েছেন, 'বিএসএফ তো আর আমার শত্রু নয়, দে আর অলসো মাই ফ্রেন্ড। কিন্তু তাদেরকে বিজেপি আর পাঁচটা কেন্দ্রীয় সংস্থার মতো নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে চাইছে। বিজেপি ভাবছে, বিএসএফ মানে বিজেপি সেফ। গায়ের জোরে এলাকা দখল করতে দেব না।' 


বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়লে সীমান্ত লাগোয়া মানুষদের ওপর জোরজুলুম বাড়বে বলেই অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের একাংশের। এমনকি বিধানসভার দাঁড়িয়ে বিএসএফের মহিলাদের অযথা উত্ত্যক্ত করার মতো ঘোরতর অভিযোগও তোলেন সদ্য উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। যার পাল্টা বলে বিজেপি। এমনকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৫০ থেকে বাড়িয়ে বিএসএফের এক্তিয়ার ৮০ কিলোমিটার করার প্রস্তাব দেন। উল্টোদিকে, বিএসএফের পক্ষে মহিলাদের দ্বারা মহিলাদের প্রয়োজনে তল্লাশি এবং অযথা হেনস্থা করার অভিযোগ খারিজ করা হয়।



গত জুলাইয়ে চারদিনের সফরে দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পেগাসাস ইস্যু নিয়ে তখন দেশের রাজনীতি ছিল উত্তাল। আপাতত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কৃষি আইন প্রত্যাহার। তার সঙ্গে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি। পাশাপাশি ত্রিপুরার উত্তপ্ত পরিস্থিতিও যে মোদির সঙ্গে আলোচনার টেবিলে তিনি উত্থাপন করবেন, সেই কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদ সোমবারই দিল্লিতে ধর্নায় বসেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও তারা সময় পাননি। যে প্রসঙ্গ তুলে সুপ্রিম কোর্টের ত্রিপুরার বিরোধীদের নিরাপত্তার নির্দেশ সেখানকার সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার মান্য করছে না বলেও অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।


আরও পড়ুন- উত্তপ্ত ত্রিপুরা আবহেই চারদিনের দিল্লি সফরে মমতা, মোদির সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা