নয়াদিল্লি: অযোধ্যা নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে সাজ সাজ রব। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও চরমে। ভোটবাক্স ভরতে বিজেপি রামমন্দিরকে নিজেদের প্রচারের কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। সেই আবহেই অযোধ্যা আমন্ত্রণ পেয়েও রামমন্দির উদ্বোধনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। দলের তরফে অনুপস্থিতির কারণও জানানো হয়েছে। রামমন্দিরের উদ্বোধন বিজেপি এবং তাদের অভিভাবক সংস্থা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের ব্যক্তিগত উদযাপনে পরিণত হয়েছে বলেই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না বলে জানাল তারা।
আগামী ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন। 'রামলালা' অর্থাৎ ভগবান রামচন্দ্রের শিশু বয়সের মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠাও ওই দিনই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সশরীরে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। রীতি-নীতি মেনে অংশ নেবেন পুজোতেই। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে রাজনীতিক, শিল্পপতি, চলচ্চিত্র তারকাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। হাতে কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকাজ্রজুন খড়্গে, সনিয়া গাঁধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকেও।
আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করলেও, রামমন্দিরের উদ্বোধনে কংগ্রেস নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন কিনা, সেই নিয়ে বিগত কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। সেই আবহেই বুধবার কংগ্রেসের তরফে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হল, অযোধ্যায় মন্দির উদ্বোধনে অংশ নেবেন না দলের নেতা-নেত্রীরা। লিখিত ওই বিবৃতিতে লেখা হয়, 'মন্দিরের কাজ অসম্পূর্ণ। সেই অবস্থায় বিজেপি এবং RSS-এর তরফে উদ্বোধের এই আয়োজনের নেপথ্যে রয়েছে নির্বাচনী স্বার্থ। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তাকে পূর্ণ সম্মান জানিয়ে, লক্ষ লক্ষ মানুষ, যাঁরা ভগবান রামকে পুজো করেন, তাঁদের প্রতিও সম্মান জানিয়ে, মল্লিকার্জুন খড়্গে, সনিয়া গাঁধী, অধীররঞ্জন চৌধুরী বিজেপি এবং RSS-এর অনুষ্ঠানে যাওয়ার আমন্ত্রণ শ্রদ্ধার সঙ্গেই প্রত্যাখ্যান করছেন'।
বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকদের অনেকেকই রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হয়। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, রাষ্ট্রীয় দলের নেতা লালুপ্রসাদ যাদব এবং সিপিএম-এর সীতারাম ইয়েচুরিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অযোধ্যা যাওয়া নিয়েও জল্পনা চলছে। যাবেন কিনা, তা স্পষ্ট ভাবে না জানালেও, একদিন আগেই এ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দেন মমতা। তিনি জানান, তিনি সেই উৎসবে বিশ্বাস করেন, যে উৎসব সবাইকে নিয়ে চলে, সকলের কথা বলে, একতার কথা বলে। মন্দির নিয়ে কোনও আপত্তি নেই তার, কিন্তু নির্বাচনের আগে যে গিমিক হচ্ছে, তাতে আপত্তি রয়েছে।
বিজেপি বিরোধী I.N.D.I.A জোটে পরস্পরের শরিক মমতার তৃণমূল এবং কংগ্রেস। রামমন্দির নিয়ে তাদের অবস্থান নিয়ে জল্পনার শেষ নেই। সেই আবহে কংগ্রেস লিখিত বার্তা দিয়ে দিল। বাকিরা কী করেন, সেদিকেও নজর রয়েছে।