কলকাতা: সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে করোনাভাইরাসের দাপট। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ট্যুইট, ‘করোনা মোকাবিলায় সবরকম পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যবাসীকে রক্ষা করতে সরকার সব পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও ওষুধ ও ভ্যাকসিন চেয়েছি। করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুপুর ২টোয় সাংবাদিক বৈঠক করবেন মুখ্যসচিব।
’
উল্লেখ্য, রাজ্য বিধানসভার ভোটের মধ্যেই লাগামছাড়া করোনার সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংক্রমণে বেড়ি পরাতে অন্যতম হাতিয়ার হল ভ্যাকসিন। তাই করোনার প্রভাব যতই বাড়ছে, ততই চাহিদা বাড়ছে ভ্যাকসিনেরও।কিন্তু যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, কার্যক্ষেত্রে তত জোগান নেই!
আর এই ভ্যাকসিন সঙ্কটের মধ্যেই এর আগে কেন্দ্রকে বিঁধে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার নরেন্দ্র মোদিকে লেখা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ভ্যাকসিন সরবরাহে অনিশ্চয়তা দুর্ভাগ্যজনক। ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পারফরম্যান্স খুব ভাল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ভ্যাকসিন কম পাঠানোয় সেই প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এই মুহূর্তে রাজ্যের ২.৭ কোটি টিকাকরণের জন্য দরকার ৫.৪ কোটি ভ্যাকসিন। খুব তাড়াতাড়ি যাতে এই সংখ্যক ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, তার জন্য আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি।
করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ওষুধ রেমডিসিভির, টসিলিজুমাব-এর জোগান নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। রোজ অন্তত ৬ হাজার রেমডিসিভিরের ভায়াল ও টসিলিজুমাব অন্তত ১ হাজার ভায়াল প্রয়োজন। এই মুহূর্তে প্রতিদিন মাত্র রেমডিসিভিরের ১ হাজার ভায়াল পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু টসিলিজুমাব-এর জোগান নেই।রাজ্যে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহেরও নিশ্চয়তা প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গই নয়, মহারাষ্ট্র, দিল্লি-সহ কমপক্ষে দশটি রাজ্য ভাকসিনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে কেন্দ্রকে আগেই চিঠি দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মোদিকে পরামর্শ দিয়ে এদিনই চিঠি দিয়েছেন মনমোহন সিংহ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ,আগামী ৬ মাসের জন্য কোন সংস্থাকে কত ভ্যাকসিন উৎপাদনের বরাত দেওয়া হয়েছে জনসমক্ষে তার তালিকা প্রকাশ করা হোক।বিভিন্ন রাজ্যে ভ্যাকসিন সরবরাহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। জরুরি ক্ষেত্রের জন্য মোট ভ্যাকসিনের মধ্যে ১০% সরবরাহ করতে হবে।৪৫ বছরের নীচে করোনা যোদ্ধাদের ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে রাজ্যগুলিকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিতে হবে।