কলকাতা: কেউ গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য, কেউ বেড়াতে। কিন্তু, দেশজুড়ে লকডাউন হওয়ায়, একাধিক রাজ্যে আটকে পড়েছেন এরাজ্যের বহু নাগরিক।
যেমন কলকাতার চিংড়িঘাটার বাসিন্দা বিশ্বেশ্বর মাইতি। ১৫ মার্চ চিকিৎসার জন্য অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ভেলোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। ১৮ তারিখ ডাক্তার দেখান। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো, হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর স্ত্রী শাশ্বতী মহান্তকে।
তিনি পেশায় চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের নার্স। মঙ্গলবার অপারেশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পর, মুহূর্তে বদলে যায় পরিস্থিতি। বিশ্বেশ্বর মাইতির দাবি,  হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে। আপাতত অপারেশন হবে না বলে জানানো হয়েছে।  এখন একটি হোটেলের মধ্যে বন্দি তাঁরা।
বিশ্বেশ্বর বলেন, আমার স্ত্রীর চোখের সমস্যা, চোখ ফেটে বেরিয়ে আসছে। এই অবস্থাতেই থাকতে হচ্ছে। কিছুটা চাল আলু এই সব বন্দোবস্ত করে রেখেছিলাম। হোটেলের লোকজন খুব সাহায্য করেছেন,গ্যাস দিয়েছেন। বাইরে রান্না করছি, খাচ্ছি আর হোটেলের ঘরের মধ্যে বন্ধ হয়ে রয়েছে।আমার স্ত্রী শুধুই কেঁদে চলেছেন।
অভিযোগ তামিলনাড়ু সরকারের হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করেও সাড়া মেলেনি।  তিনি বলেন, তামিলনাড়ু রাজ্যের হেল্পলাইন তাতে ফোন করেছি, কেউ তোলেনি। হাসপাতালে কয়েকটি ফ্যামিলি মিলে গিয়ে অনুরোধ করেছিলাম যদি তারা একটা কিছু লিখে দেন তাহলে আমরা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ফিরতে পারি, এম্বুলেন্স ৬৮ হাজার টাকা চেয়েছে তাও দিতে রাজি ছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল বলেছে পয়লা এপ্রিলের আগে তারা কিছুই দিতে করতে পারবেনা। এখন কিভাবে ফিরব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।
অন্যদিকে, হিমাচল প্রদেশে বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছেন হাওড়া ও হুগলির বেশ কয়েকজন পর্যটক। ১৫ই মার্চ কোন্নগর থেকে ১০ জন ও হাওড়া শিবপুর থেকে ৭ জনের একটি দল হিমাচলপ্রদেশ পৌঁছোয়।  ২৭ মার্চ ফিরে আসার কথা থাকলেও লকডাউন এর জেরে আটকে পড়ে তারা। আপাতত হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে একটি গেস্টহাউসে গৃহবন্দি রয়েছেন বাঙালি পর্যটকরা। একজন বলেন, একটি  ঘরে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। খাওয়া-দাওয়া সমস্যা হচ্ছে। নগদ টাকা ও প্রায় শেষের মুখে।
এই পরিস্থিতিতে দুই রাজ্যের প্রশাসনের কাছেই সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।  এর মধ্যে বুধবার উত্তর ভারত থেকে ফিরে এসেছে হুগলির শ্রীরামপুরের এক পর্যটক দল। ফেরার পথে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে যান তাঁরা। সেখানে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, পর্যটকদের কারও করোনা উপসর্গ নেই। তবে কয়েকজনের শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকায় হোম কোয়ারান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।