নয়াদিল্লি: একটি মাত্র পাকা কলা কিনতে খরচ করেছিলেন ৫২ কোটি টাকা। এবার সেটি সটান পেটে চালান করে দিলেন ধনকুবের ব্যবসায়ী। ক্যামেরার ফ্লাশের ঝলকানির মধ্যে দাঁড়িয়েই খোসা ছাড়ালেন, তার পর সটান কামড়। সাধারণ কলার চেয়ে ৫২ কোটির কলার মধ্যে স্বাদের ফারাক কত, তা-ও বোঝালেন ওই ধনকুবের। (Viral News)


প্রখ্যাত ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায়ী জাস্টিন সান এই কাণ্ড ঘটালেন। দেওয়ালে টেপ দিয়ে সাঁটা পাকা কলাটি সম্প্রতিই নিলামে কিনে নেন তিনি। তার পর থেকেই ওই কলার ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। ৫২ কোটি টাকা দিয়ে কলাটি কিনে গোড়াতেই শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন জাস্টিন। এবার সেটি পেটে চালান করে দিয়েও খবরের শিরোনামে উঠে এলেন তিনি। (Banana Taped to Wall)


৫২ কোটিতে কেনা কলার স্বাদও ব্যাখ্যা করেন জাস্টিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, 'বন্ধুদের অনেকেই কলাটির স্বাদ কেমন জানতে চাইছেন। সত্যি বলতে কী, এমন একটা কলা, যাকে ঘিরে এত কাহিনি, স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ কলার থেকে তার স্বাদ আলাদা। ১০০ বছর আগে Big Mike কলার সঙ্গে এটির স্বাদের মিল থাকতে পারে বলে মনে হয়েছে আমার'।



শিল্পকর্মের দিকে ঝোঁক রয়েছে যাঁদের, ওই পাকা কলাটিকে বিলক্ষণ চেনেন তাঁরা। পৃথিবীর সর্বত্র সেটি 'কুখ্যাত' শিল্পকর্ম হিসেবেই পরিচিত। সাদা দেওয়ালের উপর ধূসর টেপ দিয়ে আটকানো পাকা কলাটিকে শিল্পকর্ম হিসেবে তুলে ধরেন ইতালির মওরিজিও ক্যাতেলান। টেপ দিয়ে আটকানো কলাটিকে 'Edible' সৃষ্টি হিসেবে উল্লেখ করেন মরিজিও, অর্থাৎ সেটি ভক্ষণযোগ্য। ২০১৯ সালে প্রথমে মায়ামি সমুদ্রসৈকতে ওই শিল্পকর্ম নিয়ে হাজির হন তিনি। শিল্পকর্মের নাম দেন 'কমেডিয়ান'। 


সেই সময় বিষয়টি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। টেপ দিয়ে আটকানো কলাটিকে আদৌ শিল্পকর্ম হিসেবে গন্য করা উচিত কি না ওঠে প্রশ্ন। কিন্তু মওরিজিওর তরফে যুক্তি ছিল, দেওয়ালে টেপ দিয়ে আটকানো কলাটি আসলে শিল্পকর্মের বাণিজ্যিকরণকে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ তুলে ধরা হয়েছে। আজকের দিনে পৃথিবীর সর্বত্র শিল্পকর্ম বিলাসিতার মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিত্তশালীরাই সেরা শিল্পকর্মের নাগাল পান, বাকিদের কাছে তা পৌঁছয় না। শিল্পকর্ম যে বিলাস দ্রব্য নয়, তার উপর সকলের সমান অধিকার রয়েছে, তার প্রতীক স্বরূপই এমন সৃষ্টি করেছেন তিনি। 


সম্প্রতি 'কুখ্যাত' ওই শিল্পকর্মটিকে নিলামে তোলে আমেরিকার নিউ ইয়র্কের নিলাম সংস্থা Sotheby's. চিনা বংশোদ্ভূত আমেরিকার ক্রিপ্টোকারেন্সি সংস্থা Crypto-র প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন সেটি কিনে নেন। বলেন, "এটা শুধুমাত্র শিল্পকর্ম নয়। এটা আসলে সাংস্কৃতিক বিস্ময়, যা শিল্প, মিম এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির দুনিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন করেছে। আমার বিশ্বাস, এই শিল্পকর্ম আগামী দিনে আরও আলোচনা, ভাবনার উদ্রেক ঘটাবে, ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।"


৫২ টাকা খরচ করে ওই শিল্পকর্ম কিনলেও, কলাটিকে কী ভাবে তাজা রাখবেন জাস্টিন, তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, জন্য একটি সার্টিফিকেট পাচ্ছেন তিনি, যাতে বোঝা যায় সত্যি সত্যি মওরিজিও-ই সেটির সৃষ্টিকর্তা। পাশাপাশি, নির্দিষ্ট সময়ের পর পচে যাওয়া কলা পাল্টে নতুন কলাও লাগানো যাবে। কিন্তু সেসব ঝামেলার মধ্যে গেলেনই না জাস্টিন। সটান কলাটিকে পেটে চালান করে দিলেন তিনি।