নয়াদিল্লি: ঘুম ভেঙে উঠে বোঝার উপায় নেই সকাল না বিকেল। দীপাবলির আগে এখন থেকেই দূষণে মুখ ঢেকেছে গোটা দিল্লি এবং তার সংলগ্ন এলাকা (Delhi Air Pollution)। সেই নিয়ে এবার কড়া মন্তব্য় করল সুপ্রিম কোর্ট। রাজধানীর বায়ুদূষণ রাজনীতির যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে না বলে মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, দেশের রাজধানীতে মানুষের স্বাস্থ্যকে হত্যা করা হচ্ছে বলে তীব্র ভর্ৎসনা উড়়ে এল। (Supreme Court)


দীপাবলির আগে বাজি কেনাবেচার উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন জমা পড়েছিল। মঙ্গলবার তার শুনানিতেই এমন মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত। বলা হয়, "প্রত্যেক শীতে দিল্লির বাতাসে দূষণের এই প্রকোপের জন্য পড়শি রাজ্য পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ফসলের গোড়া পোড়ানো অনেকাংশেই দায়ী। এর সমাধানসূত্র বের করা দরকার। তার পর যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া নিয়ে ভাবা যাবে। কিছু অন্তত করতেই হবে।"


দিল্লিতে দূষণের প্রকোপ নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক তরজা চরমে। একদিকে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টিকে বিঁধে চলেছে বিজেপি, অন্য দিকে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আম আদমি পার্টি। সেই আবহে এদিন দিল্লি, পড়শি রাজ্য এবং কেন্দ্রকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। পাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ রেখে আপাতত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় বার করার পরামর্শ দেয়। 


আরও পড়ুন: Mizoram Elections 2023: EVM বিভ্রাটের জের, ভোট দিতে পারলেন না মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী


এদিন পঞ্জাব সরকারকে অবিলম্বে ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে নির্দেশ দেয় আদালত। পঞ্জাবের আম আদমি পার্টি সরকারের উদ্দেশে বলা হয়, "ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে হবে। কী করে করবেন, জানি না। কিন্তু বহন্ধ করতেই হবে। অবিলম্বে পদক্ষেপ করা প্রয়োজন।"


কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে আদালত বলে, এক দিকে বাজরার গুণাগুণ বোঝাতে খামতি রাখা হচ্ছে না, আর এক দিকে ধান চাষের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার ধ্বংস করা হচ্ছে। বছরের এই মরশুমে এই ধরনের ধান চাষ বন্ধ রাখা নিয়ে কেন্দ্রকে পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। পঞ্জাবের সঞ্চিত জলের নকশাই বদলে গিয়েছে বলেও এদিন মন্তব্য করে আদালত।


শীতের শুরু থেকে প্রতিবছরই দিল্লিতে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে বায়ুদূষণ। এবারও তার অন্যথা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে দিল্লিতে বাতাসের গুণমানে আরও পতন ঘটে। এই নিয়ে পর পর সেখানে বাতাসের গুণ মান 'অত্যন্ত গুরুতর' তকমা পেল। এদিন সকালে সেখানে বাতাসের গুণমানের সূচক ছিল ৩৯৪-এ। সোমবার বিকেলে ৪২১-এ ছিল সূচক। প্রতি ঘন মিটারে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা ১৫ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত হলে, তাকে শ্বাস নেওয়ার যোগ্য বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা। দিল্লি বহু আগেই ছাপিয়ে গিয়েছে।