Delhi High Court: করোনা ছড়ানোয় দোষারোপ করা হয়েছিল, ৫ বছর পর তবলিগি জামাত নিয়ে দায়ের ১৬টি মামলা খারিজ আদালতে
Tablighi Jamaat Congregation Case: দিল্লি পুলিশের তরফে আদালতে জানানো হয়, লকডাউন উপেক্ষা করে সকলে জমায়েত করেছিলেন।

নয়াদিল্লি: একটু একটু করে তখন অতিমারির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে গোটা পৃথিবী। ভারত উত্তাল হয়ে উঠেছিল তবলিগি জামাতের সমাবেশ নিয়ে। দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার জন্য তবলিগি জামাতের ওই সমাবেশকে দায়ী করা হয়। এমনকি দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে তবলিগি জামাতের দিকে আঙুল তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডিও। এর পর গত পাঁচ বছরে যমুনার বুক দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। ২০২৫ সালে এসে সেই সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। (Delhi High Court)
দিল্লি পুলিশের তরফে আদালতে জানানো হয়, লকডাউন উপেক্ষা করে সকলে জমায়েত করেছিলেন। সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘন করেন সকলে। এতে আদালত পাল্টা প্রশ্ন তোলে, হঠাৎ লকডাউনের ঘোষণা হয়েছিল। অত সংখ্যক মানুষ কোথায় যেতেন? ওই সমাবেশে যোগ দেওয়ায় অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই এফআইআর গুলিই খারিজ করে দিয়েছে আদালত, অভিযুক্তদের মুক্তি দিয়েছে। বিচারপতি নীনা বনসল কৃষ্ণা বলেন, “চার্জশিট খারিজ করা হল।” আদালতের সম্পূর্ণ নির্দেশ এখনও হাতে আসেনি। (Delhi High Court)
২০২০ সালের ৯ ও ১০ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকায় তবলিগি জামাতের ধর্মীয় সমাবেশ হয়। প্রায় ৯০০০ মানুষ তাতে অংশ নেন। ওই বছর ১৩ মার্চ রাজধানীতে ভিড় জমানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ২৫ মার্চ দেশের সর্বত্র লকডাউন কার্যকর হয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জন্য় তবলিগি জামাতের ওই সমাবেশকেই দায়ী করা হয়। সেই নিয়ে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, দ্বেষও ছড়িয়ে পড়ে। সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীদের বয়কটের ডাকও ওঠে। সেই সময় করোনা ছড়ানোর দায়ে তবলিগি জামাতের সঙ্গে যুক্ত ৭০ জন ভারতীয়র বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের হয়। যদিও সেই নিয়ে বিরুদ্ধমতও উঠে আসে। অতিমারি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ব্যর্থতা ঢাকতে সরকার ওই ধর্মীয় সংগঠনকে দোষারোপ করছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধী শিবিরের অনেক নেতা।
পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর, ২০২৫ সালের ১৭ জুলাই সেই সংক্রান্ত ১৬টি এফআইআর, সেই সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া এমনকি চার্জশিটও খারিজ করল দিল্লি হাইকোর্ট। ১৬টি এফআইআর-এ যে ৭০ জনের নাম উঠে আসে, তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা হয়েছিল। এমনকি ১৯৫ জন বিদেশি নাগরিকের নামও ছিল এফআইআর-এ। কিন্তু অধিকাংশ চার্জশিটেই কাউকে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। সেই সবই খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
গোটা ঘটনার তদন্ত করছিল দিল্লি পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। ১৮৯৭ সালের মহামারি আইনের ২ নম্বর অনুচ্ছেদ, IPC-র ১৮৮, ২৬৯, ২৭০, ১২০-বি, ২৭১ অনুচ্ছেদের আওতায় মামলা দায়ের করেছিল তারা। সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনেও। মোট ৪৮টি চার্জশিট, ১১টি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়ে। এমনকি ১৯৪৬ সালের বিদেশি আইনের অনুচ্ছেদ ১৪(বি) ধারায় ৯৫৫ জন বিদেশির বিরুদ্ধেও চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারীরা। এর মধ্যে ৯১১ জন ম্য়াজিস্ট্রেটের দ্বারস্থ হন।
পরবর্তীতে দিল্লির বিভিন্ন থানায় আরও ২৮টি এফআইআর দায়ের হয়। ১৯৩ জন বিদেশি নাগরিকের নামও ওঠে তাতে। সরকারের তরফে ৯৫০ জনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।






















