নয়াদিল্লি: জীবন সায়াহ্নে দাঁড়িয়ে ফিরে আসার মরিয়া চেষ্টা। টিভিতে 'Breaking Bad' দেখে একাত্মবোধ জেগে উঠেছিল। কিন্তু রাজধানীর উপকণ্ঠে বুকে মাদকচক্রের রমরমায় এবার নাম জড়াল খোদ তিহাড় জেলের আধিকারিকের। খুচরো বিক্রি নয়, রীতিমতো আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের সঙ্গেও তাঁর সংযোগ খুঁজে পাওয়া গেল। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। দিল্লি পুলিশ এবং নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (NCB)-র যৌথ অভিযানে এই মাদকচক্রের পর্দাফাঁস হল। (Secret Methamphetamine Lab)


মঙ্গলবার দিল্লি পুলিশ এবং NCB-র তরফে এ নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, রাজধানী সংলগ্ন গ্রেটার নয়ডা এলাকায় এই মাদকচক্র সক্রিয় ছিল। গৌতম বুদ্ধ নগরের কাসনা এলাকায় তাদের ল্যাবের খোঁজ মেলে। সেই ল্যাবে হানা দিয়ে উদ্ধার হয় ৯৫ কেজি Methamphetamin, চলতি ভাষায় যাকে Meth বলা হয়। কঠিন এবং তরল দুই অবস্থাতেতেই ওই মাদক মজুত ছিল সেখানে। (Tihar jail warden)


তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ল্যাবে Acetone, Sodium Hydroxide, Methylene Chloride, প্রিমিয়াম গ্রেডের Ethanol, Toluene, Red Phosphorous, Ethyl Acetate-এর মতো রাসায়নিকও পাওয়া গিয়েছে। মাদক তৈরিতে ব্যবহৃত, বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও উদ্ধার হয়েছে ওই ল্যাব থেকে। ২৫ অক্টোবর এই মাদকচক্রের পর্দাফাঁস করা হয়।


তবে যে তথ্য সকলকে চমকে দিয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তিহাড় জেলের এক ওয়ার্ডেন ওই ল্যাবটি চালাতেন। দিল্লির এক ব্যবসায়ী, মুম্বইয়ের এক রসায়নবিদও যুক্ত ছিলেন এই কাজের সঙ্গে। গোপনে একটি ল্যাবে সিন্থেটিক মাদক তৈরি হচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পান তদন্তকারীরা। জানা যায়, দেশের অন্দরে তো বটেই, ওই ল্যাব থেকে বিদেশেও মাদক পাচার হয়। এর পরই দিল্লি পুলিশ এবং NCB যৌথ ভাবে গ্রেটার নয়ডায় তল্লাশি অভিযানে নামে।


তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ল্যাবে হানা দেওয়ার সময় ভিতরেই ছিলেন দিল্লির ওই ব্যবসায়ী। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিহাড় জেলের ওয়ার্ডেনই গোটা বিষয়টির তদারকি করেন। বেআইনি ওই কারখানা তৈরির যাবতীয় ব্যবস্থাপনা তিনিই করেন। এর আগে, রাজস্ব বিভাগের হাতে গ্রেফতার হন দিল্লির ওই ব্যবসায়ী। মাদক মামলায় তিহাড় জেলে বন্দিও ছিলেন তিনি। সেখানেই জেলের ওয়ার্ডেনের সঙ্গে সংঝোতা হয় এবং পরবর্তীতে একসঙ্গে মাদক ব্যবসায় যুক্ত হন। 


মুম্বইয়ের যে কেমিস্ট যুক্ত ছিলেন, তিনি মাদক তৈরির দায়িত্বে ছিলেন। মাদকের গুণমান বিচার করত মেক্সিকোর Mexican CJNG Drug Cartel-এর সঙ্গে যুক্ত লোকজন। ধৃতরা সকলে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। এর আগে, গুজরাতের গাঁধীনগর, আমরেলি, রাজস্থানের সিরোহি, জোধপুর এবং মধ্যপ্রদেশের ভোপালেও এমন মাদক তৈরির ল্যাবের খোঁজ মেলে।