ওয়াশিংটন : আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। পরের বছর দেশে অনুষ্ঠিত হতে চলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়তে পারবেন না প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Former President Donald Trump)। মঙ্গলবার ট্রাম্পকে ভোটে লড়ার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি আমেরিকার ক্যাপিটলে তাঁর সমর্থকদের হামলায় ট্রাম্পের ভূমিকার জেরে এই সিদ্ধান্ত। আর আদালতের এই ঘোষণার সাথে সাথে ট্রাম্পই আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যাকে হোয়াইট হাউসে প্রবেশে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হল। আমেরিকা সংবিধানের খুবই কম ব্যবহৃত এক বিধানে বলা হয়েছে, যেসব অফিসিয়াল 'বিদ্রোহের' সঙ্গে জড়িত তাঁদের পদে থাকা যাবে না।


ট্রাম্পের পক্ষে এক আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, ক্যাপিটলে অশান্তির ঘটনা ততটা গুরুতর নয় যে তাকে বিদ্রোহ বলা যাবে। তাছাড়া সেদিনই ওয়াশিংটনে সমর্থকদের উদ্দেশে ট্রাম্পের বক্তব্য, তাঁর কথা বলার স্বাধীনতাকে তুলে ধরে। আইনজীবী বলেন, ভোটে লড়াই করা থেকে ট্রাম্পকে বঞ্চিত করার আদেশ দেওয়ার অধিকার নেই আদালতের। 


কলোরাডোর ভোটারদের একাংশের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত আদালতের। তাদের পাশে দাঁড়ায় Citizens for Responsibility and Ethics in Washington। আদালতের কাছে তারা আবেদন জানায়, ক্যাপিটলে হামলার জন্য নিজের সমর্থকদের প্ররোচিত করায় ট্রাম্পকে ডিসকোয়ালিফাই করতে হবে।


তার পরেই আদালতের এই নির্দেশিকা ঘিরে শুরু হয়েছে দুনিয়াজোড়া চর্চা। যদিও ট্রাম্পের ক্যাম্পেনের এক মুখপাত্র বলেন, কলোরাডো সুপ্রিম কোর্ট আজ রাতে একটি সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত জারি করেছে এবং আমরা দ্রুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাব। এই গভীর অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত স্থগিত করার জন্য একটি সমকালীন অনুরোধ করব।


বিতর্ক ও ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump Arrested)! একপ্রকার সমার্থক হয়ে উঠেছে আগেই। জর্জিয়ায় ভোটের ফলাফলে (Subversion In 2020 Georgia Election Result) কারচুপির অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে নতুন আলোড়ন ফেলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতারির পর নিয়ম মেনে তাঁর 'মাগ শট' ছবিও তোলেন জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টি শেরিফ। এই ঘটনার পর তুমুল আলোড়ন পড়ে যায় গোটা বিশ্বে। 


২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পরও বেশ কিছু দিন ক্ষমতা হস্তান্তরে রাজি হননি ট্রাম্প। এই নিয়ে তুমুল ডামাডোল চলে। শেষমেশ ডেমোক্র্যাটদের জয়ী প্রার্থী জো বাইডেনকে জায়গা ছাড়লেও ক্যাপিটল হিলে বেনজির অশান্তির ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন প্রাক্তন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তার পরও যে তিনি থেমে যান, তা নয়। যে মামলায় জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টি জেলে তিনি আত্মসমর্পণ করেন তাতে অভিযোগ ছিল, ২০২০ সালে জর্জিয়ার ভোটের ফলাফল এদিক-ওদিক করার চেষ্টা করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সংক্রান্ত বারোটিরও বেশি চার্জ ছিল প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে।