নয়াদিল্লি: আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিলই আগে থেকে। এবার জেট এয়ারওয়েজের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হল (Jet Airways)। জেট এয়ারওয়েজ (ইন্ডিয়া) লিমিটেডের ৫৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ED. ১৭টি ফ্ল্যাট, বাংলো, বাণিজ্যিক ভবন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে জেট এয়ারওয়েজ, সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গোয়েল, তাঁর স্ত্রী অনিতা গোয়েল, ছেলে নিভান গোয়েলের নামে থাকা সম্পত্তি। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ছাড়াও লন্ডন এবং দুবাইয়ের সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত। (Money Laundering Case)


২০০২ সালের আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইনে কমপক্ষে ৫৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ED. গোয়েলদের নামে থাকা সম্পত্তি ছাড়াও, জেটএয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, জেট এন্টারপ্রাইজেস প্রাইভেট লিমিটেডের নামে থাকা সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবারই গোয়েলের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করে ED. তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করেছিল কানাড়া ব্যাঙ্ক। 


গোয়েলের বিরুদ্ধে জালিয়াতির এফআইআর দায়ের করে কানাড়া ব্যাঙ্ক। তারা জানায়, মোট ৮৪৮ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয় জেট এয়ারওয়েজকে। তার মধ্যে ৫৩৮ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই মামলায় এ বছর ১ সেপ্টেম্বর গোয়েলকে গ্রেফতার করে ED. সেই থেকে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে রয়েছেন গোয়েল। ED-র অভিযোগ, জেট এয়ারওয়েজের প্রতিষ্ঠাতা হাওয়ালা মারফত বিদেশে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন। 


আরও পড়ুন: Rules Changed from 1 Nov 2023: আজ থেকে বদলে গেছে টাকা সংক্রান্ত এই নিয়মগুলি, আপনার ওপর পড়বে প্রভাব ?


ED-র দাবি, বিদেশে টাকা পাচার করে প্রথমে একাধিক ট্রাস্ট গড়ে তোলেন গোয়েল। তার মাধ্যমে স্থাবর সম্পত্তি কেনেন। ওই সব ট্রাস্টের টাকা আর কিছুই নয়, অপরাধ প্রক্রিয়া। অডিট রিপোর্ট তুলে ধরে ED জানায়, জেট এয়ারওয়েজ যে টাকা ঋণ নেয়, তা দিয়ে আসবাবপত্র, জামা-কাপড়, গহনা এবং সম্পত্তি কেনা হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে শুনানি চলাকালীন গোয়েল জানিয়েছিলেন, ঋণের টাকাতেই বিমান সংস্থা চলে। একে আর্থিক তছরুপ বলা যায় না। 


আদালতে গোয়েলের আইনজীবী আব্বাদ পণ্ডা, অমিত দেসাই এবং অমিত নায়েক জানান, নিজের বা পরিবারের নামে কোনও ঋণ নেননি গোয়েল। তাঁরা কেউ গ্যারান্টারও ছিলেন না। বরং ২০১১ সালের আগে জেট এয়ারওয়েজ যে পরিমাণ ঋণ নেয়, তা সাহারা এয়ারলাইন্স কিনতে ব্যবহৃত হয়। ব্যবসার রেকর্ডে এগুলির উল্লেখ রয়েছে। জেট এয়ারওয়েজই শুধু নয়, বাকি বিমান সংস্থাগুলিও সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাঙ্কের টাকাতেই বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা চলে। একে তছরুপ বলা যায় না।


আদালতে গোয়েলর আইনজীবী আরও জানান, অর্থনীতিতে সঙ্কটাবস্থা চলছিল। তার জন্যই কিছু পরিমাণ ঋণ শোধ করা সম্ভব হয়নি। এর সাপেক্ষে আদালত জানায়, নিজের নামে থাকা সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও দেননি গোয়েল। দেশে এবং বিদেশে নিজের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির তথ্যও প্রকাশ করেননি।