ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: হৃদযন্ত্র প্রায় বিকল। তড়িঘড়ি প্রয়োজন ছিল প্রতিস্থাপনের। কিন্তু চাইলেই তো আর হৃদযন্ত্র পাওয়া যায় না। তাই বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন চিকিত্‍সকরা।  শেষে মুকুন্দপুরের মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জটিল অস্ত্রোপচারে এল সাফল্য। আর তার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে প্রথম কৃত্রিম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন হল।


ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের বাসিন্দা ৫৪ বছরের ব্যক্তি। চার ঘণ্টার চেষ্টায় তাঁর শরীরে বসানো হল Ventricular Assist System বা কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের অংশ। পূর্ব ভারতে এই ধরনের অস্ত্রোপচার এই প্রথম। ঠিক কী হয়েছিল ওই ব্যক্তির? রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা  কমে যায়। আর তার ফলেই অবস্থা গুরুতর হয়ে গিয়েছিল এই ব্যক্তির। প্রতিস্থাপনযোগ্য হৃদযন্ত্র না মেলায় কৃত্রিম হৃযন্ত্রের অংশ প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


চিকিত্‍সকরা জানাচ্ছেন, যন্ত্রটি রোগীর আসল হৃদযন্ত্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। যার সঙ্গে থাকা একটি বিশেষ পাইপ দিয়ে রক্ত কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের অংশে আসবে এবং সেখান থেকে আগে থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া গতিবেগে সঞ্চালিত হবে। যন্ত্রটি সক্রিয় রাখতে দুটি ব্যাটারির প্রয়োজন হয়। সেই ব্যাটারি দুটি থাকে শরীরের বাইরে। কিন্তু যন্ত্রটির নিয়ন্ত্রক বা কন্ট্রোলারটি থাকে ভিতরে।


এই গোটা অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দিয়েছেন মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার। তিনি বলেন, যে কোনও সিস্টেম চালাতে শক্তির প্রয়োজন হয়। এর শক্তি আসবে দুটি ব্যাটারির মাধ্যমে। যেটা আমাদের মোবাইলের ব্যাটারির মতো। তবে তুলনায় ভারি। এইগুলি মূলত লিথিয়াম ব্যাটারি। প্রত্যেককে দুটো সেট দেওয়া হয়। ১২ ঘণ্টা চার্জের জন্য সময় লাগে। মোট ৮টি ব্যাটারি দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন ২৪ঘণ্টা ব্যাটারির সাহায্য়ে থাকবেন, তাহলে একবার চার্জ দিতে হবে। যত দিন যাচ্ছে ব্যাটারি ছোট হচ্ছে। সঙ্গে থাকে কন্ট্রোলার। কতটা রক্ত পাম্প করছে তা বোঝা যায়।


হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন স্থিতিশীল রয়েছেন এই ব্যক্তি।  সোমবার ৫৪ বছরের প্রতিস্থাপন হয়েছে। আজ জানাচ্ছেন সাড়া দিচ্ছে। খাপ খেয়ে গিয়েছে। আগামীদিনে এই অপারেশন করতে আশাবাদী।