গুয়াহাটি: গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বানভাসি (Assam Flood) অসমের অন্তত ২০টি জেলা (20 Districts)। বিপর্যস্ত ১ লক্ষ ২০ হাজার বাসিন্দা। অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের (State Disaster Management Authority) তরফে জানানো হয়েছে, লাগোয়া রাজ্য ও প্রতিবেশি দেশ ভূটানের তুমুল বর্ষণের জেরে বেশ কয়েকটি নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। 


কী জানা গেল?
বেকি, পাগলাদিয়া এবং পুঁটিমারি নদীর জল একাধির জায়গায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। শুধুমাত্র নলবাড়ি জেলাতেই প্রায় ৪৫ হাজার বন্যাবিধ্বস্ত, জানিয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।বাকসায় সাড়ে ২৬ হাজার, লখিমপুরে ২৫ হাজার, তামুলপুরে ১৫ হাজার এবং বরপেটা জেলায় ৪ হাজারের কাছাকাছি বন্যাকবলিত মানুষ রয়েছেন বলে খবর।জেলা প্রশাসন ১৪টি ত্রাণ শিবির এবং ১৭টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু করেছে এর মধ্যেই।এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৯১ জন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। শোচনীয় অবস্থা লাখখানেক গবাদি পশুরও। জাতীয় এবং রাজ্য  বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে আপৎকালীন বাহিনী। সাহায্য়ের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দমকলও। ৪টি বাঁধ, ৭২টি সড়ক এবং ৭টি সেতুর অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। 


ভুক্তভোগীর বয়ানে...
মনোজ রাজবংশী নামে মইরারাঙ্গা গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, 'আমাদের বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে পড়ায় পরিবারের সকলকে নিয়ে এখন বাঁধের উপর থাকতে হচ্ছে। বাড়ির বহু জিনিসপত্র বন্যার জলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমার ঘরে এখনও হাঁটু-জল। সেটিও বেড়ে চলেছে। বহু সমস্যায় জর্জরিত।' জ্যোতিষ রাজবংশী নামে আর এক গ্রামবাসী জানান, বন্যার জেরে কার্যত সব হারিয়েছেন তিনি। বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বস্তুত, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টাতেই দুটি বাঁধ-সহ একাধিক পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই বন্যায়। প্রসঙ্গত, গত বছরও বন্যার ধাক্কায় জলের তলায় চলে গিয়েছিল অসমের ৩৪টি জেলা। মৃত্যু হয় বহু মানুষের। গৃহহীন হন বহু মানুষ।  আকাশপথে বন্যা কবলিত শিলচরের একাধিক এলাকা ঘুরে দেখেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।  বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিলচরে দুর্গতদের কাছে হেলিকপ্টারে পৌঁছে দেওয়া হয় খাবার, পানীয় জলের বোতল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। বন্যায় ক্ষতি হয় অসমের নগাঁও জেলার একাধিক অঞ্চলও। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন অনেকে। ফুলাগুড়ি হাইস্কুলের ত্রাণশিবিরটি পরিদর্শনও করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনিও।     


আরও পড়ুন:কর্মসূত্রে প্রচুর বাইরে যেতে হয়? নজরে থাকুক এই বিষয়গুলি