নয়াদিল্লি: সব ঠিক থাকলে এবার দেশ পেতে চলেছে নতুন স্থায়ী লোকপাল (Lokpal)। সূত্রের খবর, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএম খানউইলকার (AM Khanwilkar) ভারতের পরবর্তী লোকপাল হতে চলেছেন। দুর্নীতি রোধের জন্য তৈরি এই চেয়ারে ২০২২ সালের পর থেকে পূর্ণ সময়ের জন্য ( full-time chairperson) কেউ বসেননি। 


লোকপাল নির্বাচনের জন্য বুধবার একটি মিটিং হয়েছিল। উচ্চ-পর্যায়ের সেই কমিটিতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi), লোকসভার বিরোধী নেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) এবং ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেখানেই সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এএম খানউইলকার-এর নামে সিলমোহর পড়েছে বলে সূত্রের খবর।


২০২২ সালের ২৯ জুলাই অবসর নিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এই বিচারপতি। তাঁর সময়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ  রায় দিয়েছিলেন এই বিচারপতি। আর্থিক তছরুপ রোখার আইন (Prevention of Money Laundering Act)-এর একাধিক কড়া ধারায় সম্মতি দেওয়া থেকে শুরু করে ২০০২ সালে গুজরাত হিংসা সংক্রান্ত ঘটনায় নরেন্দ্র মোদিকে ক্লিন চিট (Clean Chit to Narendra Modi) দেওয়ার বিরোধিতা করে দাখিল পিটিশন খারিজ রয়েছে সেই রায়ের তালিকায়।


২০০২ সালে গুজরাতের ঘটা সাম্প্রদায়িক হিংসায় আহমেদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটি-কাণ্ডে নিহত হয়েছিলেন ৬৮ জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। সেই ঘটনা নিয়ে তাঁর স্ত্রী জাকিয়া জাফরি এবং সমাজকর্মী তিস্তা শীতলভাদের (Teesta Setalvad) করা একটি পিটিশন ২০২২ সালে খারিজ করে দেন তৎকালীন বিচারপতি এএম খানউইলকার-এর নেতৃত্বে থাকা ডিভিশন বেঞ্চ। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল যে ওই পিটিশনের কোনও ভিত্তি নেই, স্রেফ উত্তাপ জিইয়ে রাখার জন্য় তা করা হয়েছিল। তারপরের দিনই আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিস্তা শীতলভাদ।


সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে তাঁর অবসর নেওয়ার ঠিক আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় রায় দিয়েছিল তাঁর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। Prevention of Money Laundering Act-এর অত্যন্ত কড়া ধারাগুলিতে সম্মতি দিয়েছিল সেই বেঞ্চ। তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা, গ্রেফতার করার ক্ষমতা, সম্পত্তি অ্যাটাচ করার মতো ক্ষমতা দেওয়ার ধারা নিয়ে মামলা ছিল সেটি।


নয়াদিল্লিতে সেন্ট্রাল ভিস্তা (Central Vista in New Delhi) এবং নতুন সংসদ ভবন তৈরির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বেশ কয়েকজন সমাজকর্মী এবং পরিবেশবিদ মামলা করেছিলেন। সেই মামলা যে বেঞ্চে ছিল সেই বেঞ্চেরও নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন বিচারপতি এএম খানউইলকার। সেই বেঞ্চের নির্দেশেই সেন্ট্রাল ভিস্তা তৈরির শেষ আইনি বাধাও কেটে যায়। শবরীমালা মামলার বেঞ্চেও ছিলেন তিনি।


বিচারপতি হিসেবে প্রথমে বম্বে হাইকোর্টে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। পরে হিমাচল প্রদেশের প্রধান বিচারপতি হন তিনি। তারপরে মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্টেও প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলেছেন। তারপরে ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি হিসেবে যোগ দেন। 


আরও পড়ুন: নিফটি আইটি ও সেরা ব্যাঙ্কিং স্টকের লাভ নিতে চান ? বাজারে এল নতুন দুটি ফান্ড, দারুণ লাভের সুযোগ