কলকাতা: হিংসার আগুন কবে পুরোপুরি নিভবে মণিপুরে (Manipur Violence)? আদৌ কি কারও কাছে এর উত্তর হয়েছে? বৃহস্পতিবার ফের জোরালো হল প্রশ্ন। রাজধানী ইম্ফল-সহ একাধিক জায়গায় বিক্ষোভকারী-পুলিশের সংঘর্ষে ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মণিপুর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, ব্যাটন চালানো হয়েছে বলে খবর। জখম একাধিক। 


কেন নতুন অশান্তি? 
গত ১৬ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তাবাহিনীর উর্দি পরা, সশস্ত্র ৫ জনকে গ্রেফতার করার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা মাথাচাড়া দেয় মণিপুরে। তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে উপত্যকার নানা জায়গায় বিক্ষোভ, অবস্থান শুরু হয়। মঙ্গলবার থেকে সেই বিক্ষোভই চরমে পৌঁছেছিল। উপত্যকার স্থানীয় বাসিন্দারা ৪৮ ঘণ্টার লকডাউনের ডাক দেন। আর তার আগের দিন অর্থাৎ সোমবার  ছিল,  অঘোষিত বনধ।
এদিন, বৃহস্পতিবার, মহিলা বিক্ষোভকারীরা উপত্যকার পাঁচটি জেলার একাধিক পুলিশ স্টেশনে মিছিল করেন। তাঁদের দাবি একটাই। ধৃত ৫ জনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। যদি মুক্তি না দেওয়া হয়, তা হলে তাঁদেরও গ্রেফতার করতে হবে, এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। এই নিয়েই বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সিনজামেই পুলিশ স্টেশনের বাইরে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। তিন জন জখম হন সেই ঘটনায়। আপাতত তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি। নতুন পরিস্থিতি দেখে কার্ফু শিথিল করার নির্দেশ প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। পরিবর্তে ফের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, এই অবস্থা আর কত দিন চলবে? গত মে মাস থেকে অশান্ত মণিপুর। ইতিমধ্যে দেড়শো জনেরও বেশি মারা গিয়েছেন। 


সমালোচনা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর...
চলতি মাসের গোড়ার দিকে, যখন G-20 শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে দেশের রাজধানী শহর যখন সেজে উঠেছে, উত্তর-পূর্ব প্রান্তে তখনও অশান্তির চোরাস্রোত বইছিল। পরিস্থিতি এমনই যে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ স্বয়ং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর 'অযাচিত পদক্ষেপের' সমালোচনা করেছিলেন। বৈঠকের আগের দিনই ফের তেতে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্য। সেই ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়, ৫০ জন জখমও হন। সংঘর্ষবিধ্বস্ত মণিপুরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে বৈঠকে কথা হয় সেবার। বিতর্কিত 'আফস্পা' আইনের আওতায় 'উপদ্রুত এলাকা'-র মেয়াদ আরও ছ'মাস বাড়ানো হবে কিনা, এই বিষয়ে কথা হয়। 'আফস্পা'-র ফলে 'উপদ্রুত এলাকা'-য় ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী বিশেষ কিছু ক্ষমতা পেয়ে থাকে। এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই দীর্ঘ ১৬ বছর অনশন চালিয়েছিলেন ইরম শর্মিলা চানু। তবে ২০২২ সালের মার্চে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেন, উত্তর-পূর্বে যে ভাবে শান্তি ফিরেছে তাতে মণিপুর, নাগাল্য়ান্ড, অসমে 'আফস্পা' এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার পরিধি কমানো হবে। 


আরও পড়ুন:কানাডা সন্ত্রাসবাদীদের 'নিরাপদ আশ্রয়'! ফের তোপ MEA-এর