নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের গত ৯ নভেম্বরের অযোধ্যা রায়ে মুসলিমদের মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫ একর বিকল্প জমির বন্দোবস্ত করার নির্দেশের বিরুদ্ধে সোমবার রিভিউ পিটিশন পেশ করল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। আইনজীবী বিষ্ণুশঙ্কর জৈন সেটি দাখিল করেন তাদের হয়ে। পিটিশনে বলা হয়েছে, মুসলিম পক্ষগুলি কখনই বিকল্প জমির আবেদন করেনি, তাই শীর্ষ আদালত আবেদনের পরিধির বাইরে গিয়ে মুসলিমদের বিকল্প জমির ব্যবস্থা করতে পারে না। যারা হিন্দুদের ধর্মস্থানে আগ্রাসন চালিয়েছে, তাদের এমন বেআইনি কাজের জন্য জমি উপহার দেওয়া যায় না, হিন্দুরা ১৯৩৪, ১৯৪৯, ১৯৯২-এ কিছু অন্যায় করেছে, এই যুক্তিতে ওদের খুশি করার জন্য ৫ একর জমি পুরস্কার দেওয়া উচিত নয়। যে সুবিধা চেয়ে আবেদনই করা হয়নি, সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে তার ব্যবস্থা করতে পারে না। প্রসঙ্গত, ন্যয়বিচার সুনিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্ট ১৪২ অনুচ্ছেদবলে যে কোনও নির্দেশ জারি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, জমিয়ত-উলেমা-ই-হিন্দ ও অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সনাল ল বোর্ড সমর্থিত কিছু ব্যক্তি সহ মুসলিম পক্ষগুলি শীর্ষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে রিভিউ পিটিশন জমা দিয়েছে।
৯ নভেম্বরের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ রামলালা বিরাজমানকে অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি দিতে বলে, মুসলিমদের নতুন মসজিদ গড়তে অযোধ্যায় বিকল্প ৫ একর জমির বন্দোবস্ত করতেও বলে। ট্রাস্ট তৈরি করে মন্দির নির্মাণ দেখভাল করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
বিতর্কিত জমিতে একটি বৈধ মসজিদ দাঁড়িয়ে ছিল, সর্বোচ্চ আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে চ্যালেঞ্জ করেছে হিন্দু মহাসভা। তাদের দাবি, বিতর্কিত এলাকায় রামলালার পূজা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে, জায়গাটি রামলালারই। ওই জমির মালিকানা, অধিকার, দখল বরাবর রামলালারই ছিল, সেখানে কখনও কোনও বৈধ ওয়াকফ তৈরি হয়নি। সুতরাং, রায়ে ‘মসজিদ’ বলে যে উল্লেখ রয়েছে, তা বদলে ‘বিতর্কিত কাঠামো’ বলা উচিত।
১৯৪৯-এ মসজিদের ভিতরে মূর্তি বসানো ও ১৯৯২-এ মসজিদ ধ্বংস করাকে বেআইনি কাজ বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। হিন্দু মহাসভার দাবি, হিন্দুদের কখনও ১৯৪৯, ১৯৯২ এর ঘটনা সম্পর্কে তাদের বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে বলা হয়নি। সুতরাং হিন্দুদের বিরুদ্ধে রায়ে যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে, তা বাদ দেওয়া হোক।