মুম্বই: ২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মুম্বইতে শুরু হল আইডিয়াজ অফ ইন্ডিয়া ৩.০। প্রদীপ জ্বালিয়ে এবিপি নেটওয়ার্কের এই ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট শুরু করেন এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর অতিদেব সরকার এবং এবিপি নেটওয়ার্কের সিইও অবিনাশ পান্ডে।


এদিন আইডিয়াজ অফ ইন্ডিয়ার (Ideas of India 2024) মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতের স্বাধীনতা থেকে গণতন্ত্র, নেহরু দর্শন থেকে রাম মন্দির- সবকিছুই ছুঁয়ে গিয়েছেন এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর অতিদেব সরকার। তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে উঠে এল হিন্দুত্ব, রামমন্দির ও ভারতীয় রাজনীতির ঐতিহ্যের কথা।


ভারতের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর সুনীল খিলনানি একটি কথা বলেছিলেন যে ভারত রাষ্ট্রের ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্র, বহুত্ববাদ এবং উন্নয়ন। এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর অতিদেব সরকার (ABP Network Chief Editor Atideb Sarkar) সেই প্রসঙ্গ তুলে এলে বলেন, 'প্রফেসর খিলনানি ভুল ছিলেন না। কিন্তু নেহরুর ভারতের ধারণা নাড়িয়ে দিয়েছেন আরেকজন।' অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের প্রসঙ্গ এনে অতিদেব সরকার বলেন, 'অযোধ্যায় যখনই রাম মন্দির হল, ধারণা এমন তৈরি হল যে ভারত হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে উপরে উঠে আসবে।' এই প্রসঙ্গেই ২০১৮ সালে মোহন ভাগবতের একটি কথা উদ্ধৃত করেন অতিদেব সরকার। সেই সময় মোহন ভাগবত বলেছিলেন, 'আমরা এমন একটি দেশ চাই যেটি সমর্থ হবে। যদিও এই সামর্থ্য অন্যদের দমিয়ে দেওয়ার জন্য নয়....এখানে যে বিষয়টি আমাদের এক সুতোতে গাঁথে সেটি হল হিন্দুত্ব।' আরএসএস প্রধান কীভাবে হিন্দুত্বকে বুঝিয়েছেন সেটাও জানান এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর অতিদেব সরকার। জানুয়ারিতে রাম মন্দির উদ্বোধনের সময় সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল আধ্যাত্মিকতা এবং বস্তুবাদে মিশেল, ধর্ম ও সরকারের মিশেল। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, 'রাম ভারতের বিশ্বাস, রাম ভারতের ভিত্তি, রাম ভারতের চিন্তা, রাম ভারতের সংবিধান।'  সেই প্রসঙ্গও তুলে অতিদেব সরকার জানান এটাই এখন ভারতের রাজনীতির মূলধারাকে বর্ণিত করে।



এই প্রসঙ্গেই সাহসী এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রসঙ্গও উঠে আসে অতিদেব সরকারের মুখে। তিনি বলেন, 'মিলেনিয়ালসরা অধিকাংশ অর্থনৈতিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত কারণ পর্যাপ্ত চাকরির অভাব রয়েছে। কিন্তু তাঁরা লুটিয়েন দিল্লির পুরনো এলিটদের উপর বিরক্ত। তাঁরা এমন লোককে ভোট দেন যাঁরা ,তাঁদের মতো করে কথা বলেন, প্রার্থনা করেন। তাঁদের চাহিদা সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব।'


Gen Z-এ প্রসঙ্গও উঠে এসেছে তাঁর বক্তব্যে।  মিলেনিয়ালসের তুলনায় তাঁদের ধারণা, স্বপ্ন কতটা আলাদা তার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন অতিদেব সরকার। এই প্রজন্মের উপর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবের কথাও উঠে আসে তাঁর বক্তব্যে।


ভারতের ধারণা নিয়েও তাঁর মত তুলে ধরেন এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর।  অর্থনীতি-সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষা, বহুত্ববাদের ধারণা হাত মেলাতে পারে বলে তাঁর মত। তিনি বলেন, 'এর মাধ্যমে জাতীয় একতা এবং ব্যক্তি সম্মান বা ব্যক্তি স্বাধীনতার মধ্যে সাংবিধানিক ভারসাম্য তৈরি হতে পারে। আরও বেশি চাকরি কীভাবে তৈরি হবে সেটা ভাবা যেতে পারে।' তাঁর মতে, এই ধারণা এমন নেতাদের মাধ্যমে প্রচার করা উচিত যাঁরা এই ধারণায় বিশ্বাস করেন এবং সহজেই নতুন প্রজন্মের সঙ্গে যোগ তৈরি করতে পারেন। 


হিন্দুত্ব থেকে রামরাজ্য...এই ধারণার বাইরেও ধারণা রয়েছে। সেই ভারতের স্বর যাতে উঠে আসে সেই কথাও বলেছেন এবিপি নেটওয়ার্কের চিফ এডিটর অতিদেব সরকার। কিন্তু সেটার জন্য দুটো প্রশ্ন রেখেছেন তিনি। বলেছেন, 'যদি রামরাজ্য না হয় ,তাহলে কী? যদি মোদি না হন, তাহলে কে?' এই দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে ওই অন্য ভারতকে, তাহলেই দেখা যাবে ধারনা বা আদর্শের আসল লড়াই। এমনটাই মত অতিদেব সরকারের।


আরও পড়ুন: তারাই যদি না-ছুঁতে পারলাম, তাহলে জীবনের মানে কী : আইডিয়াজ অফ ইন্ডিয়ার সূচনা করে বললেন CEO অবিনাশ পাণ্ডে