নয়াদিল্লি: খালিস্তানপন্থী শিখ নেতার মৃত্যুতে আগেই তদন্তে সহযোগিতার পরামর্শ দিয়েছিল ভারতকে (India-Canada Relations)। এবার কার্যতই কানাডার পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল আমেরিকাকে। তাদের দাবি, 'ফাইভ আইজ পার্টনার্সে'র পারস্পরিক সহযোগিতায় গোয়েন্দাদের তরফে যে তথ্য হাতে এসেছে, তা-ই গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (Justin Trudeau)।
খালিস্তানপন্থী, বিচ্ছিন্নতাকামী, শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের মৃত্যুতে ভারতের ভূমিকা ছিল বলে দাবি করেছেন ট্রুডো। ভারতীয় এজেন্টরা সে দেশে হিংসাত্মক কাজকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন, তাতে কানাডার নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমিকতা নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে। দিল্লি যদিও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে খালিস্তানপন্থী, ভারতবিরোধী শক্তিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। (India-Canada Tension)
সেই আবহেই এবার মুখ খুললেন কানাডায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেন। কানাডার একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে তাঁকে উদ্ধৃত করে বিষয়টি সামনে এনেছে। 'ফাইভ আইজ পার্টনার্স' বলতে আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড-এই পাঁচ দেশের জোটকে বোঝানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নজরদারি থেকে গোয়েন্দাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য ভাগাভাগি করে নেয় এই পাঁচ দেশ।
ডেভিডক উদ্ধৃত করে কানাডার ওই টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, গোয়েন্দাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য় পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নেয় ওই পাঁচ সহযোগী দেশ। তার ভিত্তিতেই কানাডীয় নাগরিকের মৃত্যুতে ভারত সংযোগের কথা তুলে ধরেছেন ট্রুডো। এর একদিন আগেই, আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেন।
গত ১৮ জুন ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় খুন হন খালিস্তানপন্থী হরদীপ। সেই নিয়েই দুই দেশের মধ্য়ে নতুন করে সংঘাত দেখা দিয়েছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতের দিকে আঙুল তোলেন ট্রুডো। হরদীপের মৃত্যুতে দিল্লি-সংযোগ উঠে এসেছে বলে দাবি করেন তিনি। হরদীপকে কানাডার নাগরিক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ভারত যদিও ট্রুডোর অভিযোগকে 'অযৌক্তিক' এবং 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে উল্লেখ করেছে।
তার পর থেকে যত সময় গিয়েছে, সংঘাত বেড়েছে বই কমেনি। দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। নাগরিকদের একে অন্যের দেশে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ভারতের তরফে কানাডীয় নাগরিকদের প্রদত্ত ভিসা পরিষেবাও আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না আপাতত। শুধু আমেরিকাই নয়, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়াও ভারতকে তদন্তে সহযোগিতা করার আর্জি জানিয়েছে। যদিও দিল্লির তরফে তা নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি। বরং কানাডাই ভারত-বিরোধী খালিস্তানপন্থীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে রেখেছে বলে পাল্টা অভিযোগ তোলা হয়েছে।