নয়াদিল্লি: সেপ্টেম্বরের গোড়ায় পূর্ব লাদাখের উত্তর প্রান্তে ১০০ থেকে ২০০ রাউন্ড 'ওয়ার্নিং শট' চালিয়েছে ভারত ও চিনা সেনা। মস্কোয় ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা আলোচনার ঠিক আগে এই ঘটনা ঘটেছে বলে সূত্রের খবর।
পূর্ব লাদাখ সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘাতের আবহ নিরসনের প্রচেষ্টা হিসেবে গত ১০ তারিখ মস্কোয় চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়াই-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন এস জয়শঙ্কর। সূত্রের খবর, তার কয়েকদিন আগেই, এই শূন্যে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে।
সূত্রের খবর, চিনা সেনার ওপর নজর রাখার জন্য প্যাংগং লেকের উত্তর প্রান্ত বেশ কয়েকটি পাহাড়ের চূড়ায় নিজেদের ছাউনি তৈরি করছিল ভারতীয় সেনা। সেই সময় চিনাদের তরফে ওই 'ওয়ার্নিং শট' চালানো হয়। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও।
বৈঠকের শেষে উভয় পক্ষই যৌথ বিবৃতি জারি করে যেখানে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে পাঁচ দফা পরিকল্পনা পেশ করা হয়। তার অন্তর্গত স্থির হয়েছে, দুপক্ষই একে অপরের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখবে, দ্রুত অস্ত্রের ব্যবহার পরিহার করবে, যথাযথ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবে, উত্তেজনা প্রশমনে ইতিবাচক ভূমিকা নেবে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থাবৃদ্ধি করবে।
এদিকে, গত সপ্তাহেও প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে ভারতীয় ছাউনির দিকে ফের একবার অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চালায় চিনা সেনা। সেই সময় তারা শূন্যে গুলি ছোঁড়ে। জুনের মতো এবারও চিনা সেনা রাইফেল ও বর্শা নিয়ে মধ্যযুগীয় পন্থা অবলম্বন করে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চালায়।
প্রসঙ্গত গত ১৪ জুন, পূর্ব লাগাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার বর্বরোচিত হামলায় ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়। ওইদিন গালওয়ান উপত্যকায়, ভারতীয় সেনার ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টে অতর্কিতে হামলা চালায় চিনা ফৌজ।
কাঁটাতারে মোড়া লাঠি, পেরেক লাগানো কাঠের তক্তা, লোহার রড দিয়ে রাতের অন্ধকারে হামলা চালিয়েছিল চিনা সেনা। এর রেশ কাটতে না কাটতে ৪৫ বছরে প্রথমবার ভারত-চিন সীমান্তে গুলি চলে। এর আগে ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশে শেষবার ভারত-চিন সীমান্তে গুলি চলেছিল।
সূত্রের খবর, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে চার পাহাড়ের চূড়া চিনা-কব্জামুক্ত করে পুনর্দখল করেছে ভারতীয় সেনা। সেইগুলি হল গুরঙ্গ হিল, মগর হিল, মুখপরি ও রেচিং লা। এই চূড়াগুলিতে নিজেদের ছাউনির চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।