নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক টানাপোড়েনের মধ্যেও দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে এবার সংঘাত দেখা দিল ভারত এবং ইরানের মধ্যে। ভারতে সংখ্য়ালঘু মুসলিমদের অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছেন দেশের সর্বোচ্চ শাসক আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। এর পাল্টা ইরানকে বিঁধেছে ভারতও। (India-Iran Relations)
সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খোলেন আয়াতোল্লা। তিনি লেখেন, 'নিজেদের মুসলিম বলে বড়াই করা উচিত নয় আমাদের, যদি না মায়ানমার, গাজা এবং ভারত অথবা অন্যত্র বসবাসকারী মুসলিমদের যন্ত্রণা উপেক্ষা করি। ইসলামের শত্রুরা গোড়া থেকেই ইসলামি উম্মাহ পরিচয়ের প্রতি আমাদের নির্বিকার রাখার চেষ্টা করে গিয়েছে'। (Ayatollah Ali Khamenei)
আয়াতোল্লার এমন মন্তব্যে পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'ভারতে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ শাসক যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র নিন্দা করছি আমরা। এই তথ্য ভুল এবং গ্রহণযোগ্য নয়। সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে যে সমস্ত দেশ অন্যের সমালোচনা করছে, সবার আগে তাদের নিজেদের রেকর্ড ঘেঁটে দেখা উচিত'।
ইজরায়েল বনাম হামাস যুদ্ধে এই মুহূর্তে তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। সরাসরি ইজরায়েলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে ইরান। সেই নিয়ে ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যেই টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এই দুই দেশের সঙ্গেই যদিও সুসম্পর্ক রয়েছে ভারতের। ভারতের আমদানিকৃত ৮০ শতাংশ তেলই পশ্চিম এশিয়া হয়ে আসে। সেক্ষেত্রে ইরানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
এমনকি পাকিস্তান এবং চিনের আপত্তি উড়িয়েই ইরানে চবাহার বন্দর প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে ভারত। চলতি বছরের মে মাসে ইরান সফরে যান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির শোকসভায় যোগ দেন। একই ভাবে, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে সন্ত্রাসী কাজকর্মের বিরুদ্ধেও এককাট্টা অবস্থান ইরান এবং ভারতের। আবার প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ইজরায়েলের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রয়েছে ভারতের। তাই প্যালেস্তাইনের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করেও, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া মন্তব্যের দিকে এগোয়নি ভারত। সেই আবহেই ইরানের সঙ্গে সংঘাত দেখা দিল।