নয়া দিল্লি: ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দ্বীপগুলিতে তখন পর্যটক, স্থানীয়দের ভিড়। সমুদ্রের হাওয়া, ঢেউ উপভোগ চলছে। হঠাৎ খামখেয়ালি সমুদ্র যেন দুলে উঠল। পিছু হটতে শুরু করল সমুদ্রের জল। যে দৃশ্য কোনওদিনও কেউ দেখেনি। জীবকূল যদিও টের পেয়েছিল। টের পেয়েছিল আদিবাসী জারোয়ারাও। ক্রমশ সমুদ্রের থেকে দূরে যেতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু কী আসতে চলেছে তা বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেনি কেউ। যখন বুঝতে পেরেছিলেন কেউ কেউ তখন তাঁদের সামনে কয়েক মিটারের সমুদ্রের ঢেউ। যেন প্রাচীর সমান। কেবল গ্রাসের অপেক্ষা।
২৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ভারত মহাসাগরের বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং সুনামির ১৭ বছর পূর্ণ হয়েছে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশের উপকূলে আঘাত করেছিল এই সুনামি। জনসংখ্যার উপর মারাত্মক হেনেছিল মারাত্মক ক্ষতি। ১৫ বছর পরও সেই ক্ষত বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারত, শ্রীলঙ্কায় নিহতদের আত্মীয়রা।
এই বিপর্যয়ে মধ্যে পড়েছিল ভারত, শ্রীলঙ্কা, মলদ্বীপ, থাইল্যান্ড এবং ইন্দোনেশিয়ার ২৩০,০০০-এরও বেশি মানুষ। দক্ষিণ সুমাত্রায় এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৯.১। প্রায় ৩০ মিটার (১০০ ফুট) উচ্চতার ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন উপকূলে৷
২০০৪ -এর ভারত মহাসাগরের এই সুনামি বক্সিং ডে সুনামি বা সুমাত্রা-আন্দামান ভূমিকম্প নামেও পরিচিত। রিপোর্ট অনুসারে, এর কম্পনগুলি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে পুরো বিশ্ব কেঁপে উঠেছিল এবং পৃথিবীর কোনও স্থান কম্পন থেকে রক্ষা পায়নি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ছিল ইন্দোনেশিয়া। অনেক মানুষের খোঁজই মেলেনি ।
সুনামিতে থাইল্যান্ডে মারা গেছেন পাঁচ হাজার তিনশ মানুষ৷ এদের মধ্যে আন্দামান সাগরের দ্বীপগুলোতে বেড়াতে আসা পর্যটকেরাও ছিলেন৷ ভারতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান৷ সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি মনে পড়লে আজও ভয়ে শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়।