অযোধ্যা: রাম মন্দিরের জমি বেচাকেনায় দুর্নীতির অভিযোগে এবার নাম জড়াল অযোধ্যার মেয়রের। অভিযোগ, ২০ লক্ষ টাকার জমি ৩ মাসের মধ্যে ২ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা দামে কেনে রাম জন্মভূমি তীর্থ ট্রাস্ট। 


জমি-দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়িয়েছে অযোধ্যার মেয়র হৃষিকেশ উপাধ্যায়ের ভাগ্নে দীপনারায়ণ উপাধ্যায়ের। সূত্রের খবর, চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জমির মালিকানা ছিল মহান্ত দেবেন্দ্রপ্রসাদ আচার্যর। 


ওই দিন দীপনারায়ণ উপাধ্যায় জমিটি ২০ লক্ষ টাকায় কেনেন। অভিযোগ, ১১ মে সেই জমিই তিনি আড়াই কোটি টাকায় ট্রাস্টকে বেচে দেন। 


যদিও দীপনারায়ণের দাবি, ট্রাস্ট ওনার কাছ থেকে দুটো জমি কেনে। সেই দুটো জমির দাম বাবদ তাঁর অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। স্ট্যাম্প ডিউটি, টিডিএস এবং আয়কর দেওয়ার পর তিনি হাতে পান ২ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা। 


অযোধ্যার মেয়রের আত্মীয়ের দাবি, জমির দাম ধরা হয় প্রতি বর্গফুট ১ হাজার ৪১২ টাকা, যা অন্য জমির দামের তুলনায় কম। 


এর আগে, গত সপ্তাহে রামমন্দিরের জন্য জমি কেনায় দুর্নীতির বিস্ফোরক অভিযোগ তোলে সমাজবাদী পার্টি, কংগ্রেস-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল।


অভিযোগ, গত ১৮ মার্চ সন্ধে ৭.১০ মিনিটে ২ কোটি টাকা দিয়ে যে জমি কেনা হয়, ১৫ মিনিট পরে সেই জমিই রাম মন্দির ট্রাস্টকে বিক্রি করা হয় সাড়ে ১৮ কোটি টাকায়। অর্থাৎ ১৫ মিনিটে জমির দাম বেড়ে যায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। 


এভাবে জমির দাম কীভাবে বাড়তে পারে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চে রাম মন্দিরের জমি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। মোট জমির পরিমাণ ১২ হাজার ৮০ বর্গ মিটার। জমির মালিক - কুসুম পাঠক ও হরিশ পাঠক।


১৮ মার্চ তাঁরা জমি বিক্রি করেন - ২ কোটি টাকায়। জমি বিক্রি করা হয় - সুলতান আনসারি ও রবিমোহন তিওয়ারিকে। সাক্ষী ছিলেন রামমন্দির ট্রাস্টের সদস্য অনিল মিশ্র ও অযোধ্যার মেয়র হৃষিকেশ উপাধ্যায়।


এর মিনিট ১৫ পরে ওই জমিই সাড়ে ১৮ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয় রামমন্দির ট্রাস্টকে। সাক্ষী সেই অনিল মিশ্র ও হৃষিকেশ উপাধ্যায়, যাঁরা দু’জনেই রাম মন্দির ট্রাস্টের সদস্য। 


আরটিজিএস-এর মাধ্যমে সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয়। অর্থাৎ এখনও বাকি প্রায় দেড় কোটি টাকা। এই লেনদেনেই দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে বিরোধীরা। এই প্রেক্ষাপটে তদন্তের দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে।


এপ্রসঙ্গে হৃষিকেশ উপাধ্যায়ের সাফাই, মার্কেট রেট যা সেই অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে, এখানে বিমানবন্দর হবে, জমির দাম বাড়ানোর দাবি এমনিতেই তুলেছেন সাধারণ মানুষ, ভুল তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে এ নিয়ে। 


রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের মহাসচিব চম্পত রায় অবশ্য জমি দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দেন। বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ তোলা হয়, আমাদের বিরুদ্ধে মহাত্মা গাঁধীকে খুনের অভিযোগও উঠেছিল, আপনি আপনার কাজ করুন, আমরা আমাদের কাজ করব।