মুম্বই: মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ছত্রাক-রোগ মিউকরমাইকোসিস। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কবলে এখনও পর্যন্ত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০০ পার। এই তথ্য জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে।


তিনি জানান, গত বছর করোনা সেকেন্ড ওয়েভের ধাক্কার প্রায়  সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে শুরু করে মিউকরমাইকোসিস। একে হাল্কাভাবে নিলে চলবে না। এই প্রেক্ষিতে তিনি কোভিড চিকিৎসায় যথেচ্ছভাবে স্টেরয়েড ব্যবহার বন্ধ করতে। 


তিনি যোগ করেন, ডায়াবেটিস ও শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে অনেকের মধ্যে এই ছত্রাকজনিত রোগে সংক্রমিত হচ্ছেন। তাঁর মতে, স্টেরয়েডের ফলে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। 


তিনি বলেন, মিউকরমাইকোসিস রোগের চিকিৎসা করতে প্রস্তুত মহারাষ্ট্র। এর জন্য চিকিৎসকদের ৯-পাতার নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই সংক্রমণের মোকাবিলা করতে এবং সংক্রমণ এড়াতে কী কী করতে হবে। 


এরমধ্যেই, অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি ইঞ্জেকশনের আকাল দেখা দিয়েছে মহারাষ্ট্রে। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল কোভিড বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। 


সেখানে মিউকরমাইকোসিস পরিস্থিতি নিয়ে দুজনের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, পরিস্থিতির নিরিখে সেখানে বেশি পরিমাণ অ্যাম্ফোটেরিসিন-বি ইঞ্জেকশন পাঠানোর আর্জি জানাতে পারেন উদ্ধব। 


গতকালই করোনার পর এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসকে মহামারী ঘোষণা করল রাজস্থান সরকার।  এদিন একই পথে হাঁটল তেলঙ্গানা সরকারও। 


কোভিড রোগীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরোমাইকোসিস। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গেও থাবা বসিয়েছে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে। এই প্রথম ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এ রাজ্যের বাসিন্দা, পঞ্চাশোর্ধ্ব এক মহিলার। জানা যায়, সম্প্রতি করোনামুক্ত হওয়ার পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হন তিনি। তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দিন পাঁচেক আগে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। 


এখনও পর্যন্ত ৫ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। সব ক্ষেত্রেই কোভিড কারণ নয়, এমনটাই মত স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ ‘অ্যাম্ফোটিরিসিন-বি’ রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এই ওষুধ কখন ও কীভাবে প্রয়োগ করতে হবে, তার গাইডলাইন তৈরি হচ্ছে। এই গাইডলাইন তৈরি নিয়েই গতকাল স্বাস্থ্যভবনে বৈঠক হয়। সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নিয়মিত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।