নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধীকে তুলোধনা করে দল ছাড়লেন জাতীয় কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদ (Ghulam Nabi Azad)। দলের অন্যতম বরিষ্ঠ নেতা ছিলেন তিনি। দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে কংগ্রেসের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকেও চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। সেখানে প্রতি ছত্রে একাধিক সমালোচনা করেছেন গুলাম নবি আজাদ। বর্ষীয়ান এই নেতার নিশানায় মূলত রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)।
গুলামের নিশানায় রাহুল:
সনিয়া গাঁধীকে (Sonia Gandhi) তিনি যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে তিনি অভিযোগ করেছেন, 'রাহুল গাঁধী রাজনীতিতে আসার পর থেকে, বিশেষ করে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের পরে আপনি যখন রাহুলকে কংগ্রেসের সহা সভাপতির পদে বসিয়েছেন তার পর থেকেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন উনি। সব বরিষ্ঠ ও অভিজ্ঞ নেতাদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।' সূত্রের খবর, ইস্তফাপত্রে গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করেছেন, দলে প্রবীণদের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিল না। নবীনদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছিল। রাহুল গান্দীর নেতৃত্ব যে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না, তা চিঠিতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন গুলাম নবি আজাদ। তাঁর অভিযোগ, রাহুল প্রবীণ নেতাদের অসম্মান করতেন। কংগ্রসের জি ২৩ গোষ্ঠীর নেতারা দলে সংস্কার চেয়ে চিঠি দেওয়ার পর কপিল সিব্বলের বাড়িতে হামলা হয়েছিল, তাঁকেও অসম্মান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা। সেইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এখন রাহুলের নিরাপত্তারক্ষীরা দল চালান। ইউপিএ আমলের মতো রিমোট কন্ট্রোলে কংগ্রেস চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
বারবার হারের জন্যও নিশানা:
গুলাম নবি আজাদের অভিযোগ, এখনকার নেতৃত্বের অধীনে কংগ্রেস যাবতীয় ইচ্ছা ও ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় এই নেতার মতে, জাতীয় স্তরে বিজেপির কাছে রাজনৈতিক জমি খুইয়েছে কংগ্রেস। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির কাছেও কংগ্রেস জমি হারিয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। সনিয়া গাঁধীকে দেওয়া চিঠিতে তিনি বলেছেন, ইউপিএ ১ ও ইউপিএ ২ সাফল্যের সঙ্গে তৈরি হয়েছিল কারণ সভানেত্রী হিসেবে সনিয়া গাঁধী দলের বরিষ্ঠ নেতাদের পরামর্শ শুনেছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে একবার একটি সরকারি অর্ডিন্যান্স ছিঁড়ে ফেলেছিলেন রাহুল গাঁধী। তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। চিঠিতে সেই ঘটনারও সমালোচনা করেছেন গুলাম নবি আজাদ। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কংগ্রেসের একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে হার নিয়েও কার্যত রাহুল গাঁধীকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন কংগ্রেসত্যাগী এই বর্ষীয়ান নেতা।
'দুঃখের সঙ্গে এই পদক্ষেপ':
চিঠিতে শেষে তিনি লিখেছেন, মনে অত্যন্ত দুঃখ নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর অর্ধশতকের এই সম্পর্ক তিনি ছিন্ন করছেন। কংগ্রেসের সাধারণ সদস্যপদও তিনি ত্যাগ করছেন বলে জানিয়েছেন।