বেঙ্গালুরু : হিজাব বিতর্কে (Hijab Contovery) উত্তপ্ত কর্ণাটক (Karnataka)। বিক্ষোভ-বিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশজুড়ে। এর মাঝেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নেওয়া হল পদক্ষেপ। আগামী দু-সপ্তাহের জন্য রাজধানী বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) সমস্ত শিক্ষাঙ্গনে সব ধরণের জমায়েতে জারি করা হল নিষেধাজ্ঞা। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাই বোম্মাই (Basavraj Bommbai) জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। কর্ণাটকের বেশ কয়েকটি জায়গায় হিজাব পড়া ছাত্রীদের ওপর হামলার ঘটনা সামনে আসতে শুরু করার পরই নেওয়া হয়েছে যে সিদ্ধান্ত। এদিকে, কর্ণাটক হাইকোর্টে (Karnataka High Court) দায়ের হওয়া হিজাব মামলা স্থানান্তর করা হয়েছে আদালতের বৃহত্তর বেঞ্চে।
গত জানুয়ারি মাসে হিজাব ঘিরে বিতর্ক চরমে ওঠে। উদুপির গভর্নমেন্ট গার্লস পিইউ কলেজে হিজাব পরিহিত ছয় মেয়েকে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। দক্ষিণপন্থী সংগঠনের তরফে এই দাবি ওঠে বলে অভিযোগ করেন হেনস্থার শিকার ওই মেয়েরা। চলতি মাসের শুরুতে নতুন করে সেই বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। উদুপি এবং চিকমাগালুরুর দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে স্কুল-কলেজে ঢোকায় আপত্তি তোলে। বিবাদ এতটাই চরমে পৌঁছয় যে, মুসলিম মেয়েদের হিজাবের পাল্টা শুক্রবার গেরুয়া ওড়না পরে কলেজে আসতে দেখা যায় পড়ুয়াদের একাংশকে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার ধারণ করে সেখানে। বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের টপকে কলেজের ফটকে গেরুয়া পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে বচসা থেকে পরস্পরকে লক্ষ্য করে চলে পাথর ছোড়াছুড়ি।
চলতি বিতর্কের মাঝেই প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বলেন, ‘বিকিনি হোক, ঘুংঘাট হোক, জিন্সের জোড়া হোক বা হিজাব হোক, তিনি কী পরতে চান তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে একজন নারীর। এই অধিকারটি ভারতীয় সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। নারীদের হয়রানি বন্ধ করুন।’ অন্যদিকে, নোবেল বিজয়ী সমাজ কর্মী মালালা ইউসুফজাইও হিজাব বিতর্কে মুখ খুলেছেন৷ তিনি মহিলাদের অধিকার রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন৷ ক্ষোভ প্রকাশ করে মালালা বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেয়েদের পড়াশোনা ও হিজাবের মধ্যে একটাকে বেছে নিতে বলছে৷ যা ভয়ঙ্কর৷’’
টুইট করে মালালা লেখেন, ‘‘কলেজ আমাদের পড়াশোনা এবং হিজাবের মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য করছে”। মেয়েদের হিজাব পরে স্কুলে যেতে দিতে অস্বীকার করা ভয়ঙ্কর। নারীর অবজেক্টিফিকেশন বজায় থাকে-কম বা বেশি পরার জন্য। ভারতীয় নেতাদের অবশ্যই মুসলিম নারীদের প্রান্তিককরণ বন্ধ করতে হবে।’’