ত্রিথেশ নন্দন, নয়াদিল্লি: কোনও দেশের উন্নয়নের অন্য়তম ভিত্তি সেখানকার পরিকাঠামো। যার মধ্য়ে পড়ে সড়ক (Road Transport) ব্যবস্থাও। ঠিক তার সঙ্গেই জুড়ে থাকে সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি। যে কোনও দেশেই সড়ক দুর্ঘটনার হার কমানো বা একেবারে শূন্যে নিয়ে আসা সেই দেশের প্রশাসনের লক্ষ্য হয়ে থাকে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। এই দেশেও সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে নানা পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্র ও রাজ্যের প্রশাসন। 


সামলাবেন কারা?
সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার পরিচালন ব্যবস্থা ঠিক রাখার প্রায় গোটা কাজটাই করেন ট্রাফিক পুলিশরা। অটোমেটিক সিগন্যাল হলেও পরিচালনার মূল ভার থাকে ট্রাফিক পুলিশের হাতেই। কিন্তু ভারতের অধিকাংশ শহরে ট্রাফিকের অবস্থা তথৈবচ। ট্রাফিক আইন ভাঙার (Traffic Violation) ঘটনা ঘটে, যানজটে নাকাল হন নাগরিকরা। পাশাপাশি ঘটে থাকে দুর্ঘটনাও। কেন এই অবস্থা? তথ্য বলছে ট্রাফিক ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য যাঁদের সবচেয়ে বেশি দরকার, অর্থাৎ ট্রাফিক পুলিশই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম রয়েছেন। তাহলে কি এই দুইয়ের মধ্য়ে কোনও যোগ রয়েছে?




বহু ফাঁকা পদ:
ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর ২০২১ সালের তথ্য বলছে সারা দেশের হিসাব অনুযায়ী ট্রাফিক পুলিশে (Traffic Police) ফাঁকা পদ (vacant posts) রয়েছে ২৯ শতাংশ। 




তালিকায় প্রথম বাংলা:
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি রাজ্যের নিয়ন্ত্রণাধীন। ট্রাফিক পুলিশের ফাঁকা পদের বিচারে প্রথম দিকে রয়েছে কোন রাজ্যগুলি? ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (Bureau of Police Research and Development )-এর ২০২১ সালের তথ্যে চোখ রাখলে আঁতকে উঠতে হয়। ট্রাফিক পুলিশে ফাঁকা পদের হিসেবে যদি বিচার করা হয়, তাহলে সারা দেশের মধ্য়ে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal)। এই রাজ্যে মোতায়েন থাকা বাহিনীর তুলনায় ফাঁকা পদের সংখ্যা বেশি। বাংলায় ট্রাফিক দফতরে ৫১ শতাংশ কর্মীর পদ ফাঁকা রয়েছে।  দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে গুজরাত। ৪৯ শতাংশ ফাঁকা পদ রয়েছে এই রাজ্যে। ফাঁকা পদের বিচারে প্রথম আটটি রাজ্য়ের তালিকায় রয়েছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু। এই তালিকায় রয়েছে খোদ রাজধানী দিল্লিও।




ভারতে ট্রাফিক আইন ভাঙার বহু ঘটনা ঘটে থাকে। কী কী ঘটনা ঘটলে ট্রাফিক আইন ভাঙা হয়েছে বলে ধরা হয়? অতিরিক্ত জোরে গাড়ি চালানো, নেশাগ্রস্ত হয়ে গাড়ি চালানো (Drunken Driving), রাস্তার ভুল দিকে গাড়ি চালানো, সিগন্য়াল না মানা, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার এবং আরও কিছু বিষয়। সড়ক পরিবহন মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে সারা ভারতে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৩৮টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। যা অবশ্য তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালের তুলনায় ১৮.৫ শতাংশ কম। ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় দুর্ঘটনা হয়েছে Over-Speeding বা অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। 




দুর্ঘটনা রুখতে সম্প্রতি যান নিয়ন্ত্রণ আইন আরও কড়া হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে একলাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জরিমানার অঙ্কও। তারপরেও কি হুঁশ ফিরেছে? তাহলে কি ট্রাফিক পুলিশে ফাঁকা পদের কারণেই রাস্তায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ ধাক্কা খাচ্ছে? ঘটছে দুর্ঘটনা? রয়ে যাচ্ছে এই প্রশ্ন। 


আরও পড়ুন: বর্ষায় অপরূপা এই জলপ্রপাত, নায়াগ্রা বলে ভ্রম হতে বাধ্য, দেখুন ভাইরাল ভিডিও