নয়াদিল্লি: অকালে চলে গিয়েছেন প্রিয়জন। একে একে হারিয়ে গিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। মারণ ভাইরাসের আক্রমণে সারা বিশ্বে প্রাণ হারিয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ভয়ের ছবি দেখিয়েছে করোনা। আর এবার আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেটে উঠে এল আরও এক মর্মান্তিক তথ্য। তাদের সমীক্ষায় দাবি, করোনা সংক্রমণের প্রথম ১৪ মাসে সারা বিশ্বের ২১টি দেশে ১৫ লক্ষেরও বেশি শিশু বাবা, মা সহ অভিভাবককে হারিয়েছে। যার মধ্যে শুধু ভারতেই এই সংখ্যাটা ১ লক্ষ ১৯ হাজার।


ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ড্রাগ অ্যাবিউস দ্য ল্যানসেটের এই সমীক্ষায় অংশ নেয়। সমীক্ষা শেষে ল্যানসেট জানিয়েছে, ২৫ হাজার শিশু তাদের মাকে হারিয়েছে। ৯০ হাজার ৭৫১ জন শিশুর বাবার মৃত্যু হয়েছে। ১২ শিশু হারিয়েছে বাবা এবং মাকে।  ল্যানসেটের সমীক্ষা বলছে, বিশ্বজুড়ে বাবা এবং মাকে হারিয়ে দাদু-দিদা-ঠাকুরদা-ঠাকুমার কাছে রয়েছে এমন শিশুর সংখ্যা ১১ লক্ষ ৩৪ হাজার। মোট ১০ লক্ষ ৪২ হাজার শিশু বাবা এবং মা দুজনকেই হারিয়েছে করোনাকালে।  


বাবা বা মা অথবা অভিভাবককে হারিয়েছে এমন শিশুদের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, ব্রাজিল, কলোম্বিয়া, ইরান, আমেরিকা, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ড্রাগ অ্যাবিউসের ডিরেক্টর নোরা ডি ভলকো বলেন, বাবা বা মা অথবা  অথবা অভিভাবকের মৃ্ত্যুর পরে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় শিশুর। যা তার ভবিষ্যতে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন ওই শিশু মানসিকভাবে সুস্থ থাকে। দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দাদু-দিদা-ঠাকুরদা-ঠাকুমাকে হারিয়েছে এমন শিশুর সংখ্যা ২ হাজার ৮৯৮। শতাংশের হিসেবে বাবা বা মাকে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬.৪ শতাংশ শিশু, ব্রাজিলের ৩.৫ শতাংশ, পেরুর ১৪.১ শতাংশ, মেক্সিকোর ৫.১ শতাংশ, রাশিয়ার ২ শতাংশ, আমেরিকার ১.৮ শতাংশ শিশু। রিপোর্ট অনুযায়ী, একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া প্রতিটি দেশেই মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মৃত্যু সংখ্যা বেশি।