নয়াদিল্লি: মারা গেলেন অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের প্রধান মহন্ত নরেন্দ্র গিরি। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক অনুমান আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রয়াগরাজে বাঘামবাড়ি মঠে মহন্তের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ মিলেছে। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ১২ পাতার সুইসাইড নোট। ওই নোটের সূত্রে হরিদ্বার থেকে আনন্দ গিরি নামে নরেন্দ্র গিরির এক শিষ্যকে আটক করেছে পুলিশ। সুইসাইড নোটে আনন্দ গিরির প্রতারণার কারণে বিপর্যস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে,  আনন্দের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে তাঁর গুরুজিকে। পুলিশ আর জমি মাফিয়াদের চক্রান্তে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁকে। 


এরইমধ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ও উঠে এসেছে।পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে নরেন্দ্র গিরি তাঁর উত্তরাধিকারের বিষয়টিও লিখে গিয়েছেন। এডিজি প্রশান্ত কুমার বলেছেন, সুইসাইড নোটে  মহন্ত গিরি মঠ ও আশ্রম নিয়ে ভবিষ্যতে কী করতে হবে, তা লিখে গিয়েছেন। লিখে গিয়েছেন, কী ধরনের ব্যবস্থা হবে, কী করতে হবে। সুইসাইড নোটে তা এর ধরনের উইল-ই বলা যায়। এতে সবিস্তারে জানানো হয়েছে, কাকে কী দিতে হবে এবং কার সঙ্গে কী ব্যবস্থা করতে হবে।


পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নরেন্দ্র গিরির দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট হবে, কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।


সুইসাইড নোটে নরেন্দ্র গিরি তাঁর শিষ্য আনন্দ গিরির কথাও উল্লেখ করেছেন। এর ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে আনন্দ গিরিকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, শিষ্য আনন্দ গিরিকে নিয়ে হতাশ ছিলেন মহন্ত নরেন্দ্র গিরি। সুইসাইড নোটের তথ্য সামনে আসার আগে আনন্দ গিরি বলেছিলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই নরেন্দ্র গিরির শিষ্য। আমাদের দুজনকে আলাদা করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, যাতে কোনও একজনের পতন ঘটানো যায়। আজ আমাদের গুরুজী নেই। এটা বড়সড় ষড়যন্ত্র। আমি এখান থেকে বেরিয়েছি, ওখানে যাব, সমস্ত বিষয় জানব, তবেই কিছু বলতে পারব। এখন কিছু বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই।


আনন্দ গিরি বলেছিলেন, আমার সঙ্গে তাঁর কোনও বিবাদ ছিল না। বিবাদ মঠের জমি বিক্রি নিয়ে হয়েছিল। কয়েকজন গুরুজীর সঙ্গে ওঠা-বসা করতেন।ওই সব লোকজনের নজর মঠের জমির ওপর ছিল। আমি মঠের জমি বিক্রির বিরুদ্ধে ছিলাম। সেজন্যই ওই সব লোকজন গুরুজীকে আমার বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলে এবং এতে গুরুজী এজন্য আমার ওপর ক্ষুন্ন হয়েছিলেন। গুরুজী আমাকে বলেছিলেন, এই সব লোকজন ঠিক নয়। ওই সব লোকজন গুরুজীকে দূরে সরিয়ে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল।