মুম্বই: ফের টালমাটাল মহারাষ্ট্র। সাতসকালে একঝাঁক বিধায়ককে নিয়ে গায়েব হয়ে গেলেন শিবসেনার (Shiv Sena) বর্ষীয়ান নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (Eknath Shinde)। দলবদলের জল্পনা যখন তুঙ্গে ঠিক তখনই সূত্রের খবর, সুরাতে ঘাঁটি গেঁড়েছেন বিক্ষুব্ধ শিবসৈনিকরা। দিনভর জারি টানটান নাটক। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তার আঁচ বিধান পরিষদের নির্বাচনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ক্রস-ভোটিংয়ের জেরে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল শিবসেনার নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্রের শাসকজোট মহা বিকাশ আগাড়ি। কিন্তু মঙ্গলবার যা ঘটল, তার পর বড়সড় রদবদল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। অন্তত পাটিগণিত তাই বলছে।


টালমাটাল মহারাষ্ট্র:
মহারাষ্ট্র (Maharashtra) বিধানসভায় আসনসংখ্যা ২৮৮। কিন্তু শিবসেনার বিধায়ক রমেশ লতকের মৃত্যু হওয়ায় সংখ্যাটি এখন ২৮৭। ফলে এই মুহূর্তে আস্থা ভোট হলে ক্ষমতায় ফিরতে শাসকজোটকে ১৪৪টি আসন জিততে হবে। এমনিতে শাসকজোটের ঝুলিতে সব মিলিয়ে ১৬৯ জন বিধায়ক থাকার কথা। কিন্তু জোটের অন্দরে আশঙ্কা, আজকের পর সব হিসেব উল্টে যেতে পারে। কারণ সূত্রের খবর, শিন্ডের সঙ্গে ৪৪ জন বিধায়ক ঘাঁটি গেড়েছেন সুরাতে। তবে এনসিপি ও কংগ্রেস কোনও সঙ্কটের তত্ত্ব মানতে নারাজ। যদিও কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াতের অভিযোগ, যে ভাবে মহারাষ্ট্রে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে সেখান থেকেই স্পষ্ট বিজেপি ঠিক কতটা ক্ষমতালিপ্সু। রাওয়াতের কথায়,‘ বিজেপি সরকার গড়তে না পারলেও কিছু লোকজনকে কিনে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।’ কঠিন সময় যে কেটে যাবে সে ইঙ্গিত দিয়েছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারও। তাঁর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর (Chieh Minister) পদ শিবসেনার, উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ এনসিপির। তাই মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে শিবসেনা যা সিদ্ধান্ত নেবে, এনসিপি পাশে থাকবে। তবে শিন্ডে ও বাকি বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের শিবসেনাকেই সামলাতে হবে, সংযোজন পাওয়ারের।


কোথায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি:
কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত বিগড়োচ্ছে। সূত্রের খবর, রাতের দিকে সুরাতের হোটেলে পৌঁছে যান আরও দু’জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। দিনভর বৈঠক-আলোচনা সত্ত্বেও সঙ্কট যে কাটেনি, তা মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তেও স্পষ্ট। গভীর রাতে বৈঠকে বসতে পারেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। তা হলে কি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের প্রতিনিধির সঙ্গে শিন্ডের যে বৈঠক, তা ফলপ্রসূ হয়নি? সূত্রের খবর, দলনেতার মানভঞ্জনে সুরাতের হোটেলে গিয়ে কথা বলেছিলেন উদ্ধবের প্রতিনিধি। দেড় ঘণ্টার কথাবার্তার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপও সারেন শিন্ডে। কিন্তু বরফ গলেনি। বরং তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘আমি এখনও বিধায়ক ও মন্ত্রী। তা হলে কোন যুক্তিতে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পরিষদীয় দলনেতার পদ থেকে সরালেন?’


সব মিলিয়ে টানটান উত্তেজনা।নতুন সমীকরণের আঁচ। তবে মূল প্রশ্ন একটাই। মহারাষ্ট্রে কি পালাবদল আসন্ন? এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে তুলনামূলক ভাবে ছোট দল ও নির্দল বিধায়ক মিলিয়ে প্রায় ২৯ জনের  ভূমিকা নির্ণায়ক হতে পারে। চর্চা বাণিজ্যনগরীতে।


আরও পড়ুন: এনডিএর রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু, কে তিনি?