নয়াদিল্লি: ফ্রান্স সফরে সেদেশের সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে লিঁজিয় অফ অনার সম্মানে ভূষিত করা হয়। বাস্তিল দিবসের প্যারেডে অতিথি হিসেবে তাঁকে বরণ করা হয়। এই সফরে চোখ টেনেছে আরও একটি দিক। উপহার বিনিময়।
ফ্রান্স সফরেও মোদির উপহারের ডালিতে ছিল চন্দনকাঠ। চন্দনকাঠের তৈরি সেতারের ছোট সংস্করণ মাকরঁকে উপহার দিয়েছেন মোদি। দক্ষিণ ভারতে চন্দনকাঠের এমন কারুকাজ করা হয়। সেই সেতারে দেবী সরস্বতী খোদিত করা। খোদিত রয়েছেন ভগবান গণেশও। তার সঙ্গেই ময়ূর খোদিত করা। ওই সিতারে ছোট ছোট করে তুলে ধরা হয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির নানা ছবি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী অর্থাৎ ফ্রান্সের ফার্স্ট লেডি ব্রিজেট মাকরঁ (Brigitte Macron)। তাঁকে একটি বিশেষ শাড়ি উপহার দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। পোচামপল্লি বা পোষমপল্লি সিল্ক ইক্কত উপহার দিয়েছেন মোদি। একটি চন্দনকাঠের বাক্সের মধ্যে রয়েছে সেই শাড়িটি। পোচামপল্লি সিল্কের শিকড় তেলঙ্গানা। সেখানকার পোচামপল্লি শহরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এটি। ভারতের সমৃদ্ধ বস্ত্র ঐতিহ্যের অংশ এটি। জটিল নকশা এবং প্রাণবন্ত রঙের জন্য বিখ্যাত এই শাড়ি।
প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্নকে 'মারবেল ইনলে ওয়ার্ক' দিয়ে সুশোভিত একটি টেবিল উপহার দেওয়া হয়েছে। রাজস্থানের মাকরানা থেকে উচ্চমানের মার্বেল এবং ভারতের বিভিন্ন অংশ থেকে সেমি প্রেশাস পাথর ব্যবহার করে মার্বেল ইনলের কাজ করে ওটি তৈরি করা হয়েছে।
ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ইয়ায়েল ব্রাউন-পিভেট হাতে বোনা সিল্ক কাশ্মীরি কার্পেট পেয়েছেন, কোমলতা এবং জটিল কারুকার্যের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ। ফ্রান্সের সেনেটের প্রেসিডেন্ট জেরার্ড লার্চারকে একটি চন্দন কাঠের খোদাই করা হাতির মূর্তি উপহার দেওয়া হয়েছে। হাতি, ভারতীয় সংস্কৃতিতে জ্ঞান, শক্তি এবং সৌভাগ্যের প্রতীক।
জুনের শেষে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন মোদি। সেখানেও ছিল নজরকাড়া উপহার। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনকে বিশেষ উপহার দিয়েছিলেন মোদি। বাইডেনকে একটি চন্দনকাঠের বাক্স দিয়েছিলেন মোদি। ওই চন্দনকাঠের বাক্সটি তৈরি করেছিলেন রাজস্থানের জয়পুরের শিল্পীরা। তার মধ্যে ছোট ছোট একাধিক উপহার ছিল। পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা তৈরি করেছিলেন রূপোর নারকেল। তাতে ছিল মাইসোরের একটি চন্দনকাঠ। তামিলনাড়ু থেকে আনা সাদা তিল। রাজস্থানে তৈরি ২৪ ক্যারেটের সোনার কয়েন। গুজরাতে তৈরি লবণও ছিল। পঞ্জাব থেকে ঘি, ঝাড়খণ্ডের সিল্ক, উত্তরাখণ্ডের চাল,মহারাষ্ট্রের গুড়ও ছিল ওই বাক্সে। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, বাইডেনকে মোদি যে উপহার দিয়েছিলেন। তা হিন্দু সংস্কৃতির একটি অংশ। ANI সূত্রের খবর, সেটির নাম দৃষ্ট সহস্রচন্দ্র, যে ব্যক্তি আশি বছর এবং আট মাস পূর্ণ করে এক হাজার পূর্ণ চন্দ্র দেখেছেন তাঁকে দেওয়া হয়। এই উপহারে দশ রকম জিনিস উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাইডেনকে একটি বই উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নাম ‘The Ten Principal Upanishads’। আমেরিকার ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনকেও উপহার দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে একটি সাড়ে সাত ক্যারাটের গ্রিন ডায়মন্ড উপহার দিয়েছিলেন মোদি।
আরও পড়ুন: এইমস কল্যাণীতে টেকনিশিয়ান নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত, এঁরা করতে পারবেন আবেদন