উত্তরাখণ্ড: দেবভূমিতে ফের তুষারধস। বুধবার সকালে কেদারনাথ মন্দিরের পেছনের অংশে তুষারধস হয়। এদিন বিকেলেও একই ছবি দেখতে পান যাত্রীরা। এই ঘটনায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর মেলেনি। ২০২২-এও কেদারনাথ যাত্রার সময়ে একাধিকবার তুষারপাতের কবলে পড়েন যাত্রীরা । গতবছর চারধাম যাত্রায় একের পর এক মৃত্যুর খবর আসে। কেদারনাথেই প্রাণ হারান ৮২ পুণ্যার্থী। গত বছর গত ৩ মে যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে সবমিলিয়ে ৮২ জন পুণ্যার্থী প্রাণ হারিয়েছিলেন (Pilgrims)। এর মধ্যে প্রথম ৪০ দিনেই ৭৫ জন পুণ্যার্থী প্রাণ হারিয়েছেন বলে খবর। বিগত ১০ বছরে এত কম সময়ের মধ্যে, এত সংখ্যক পুণ্যার্থীর মৃত্যুর নজির নেই। 


হেলিকপ্টার ভেঙে ভয়াবহ দুর্ঘটনা: গত বছর ৮ অক্টোবর রুদ্রপ্রয়াগে হেলিকপ্টার ভেঙে ভয়াবহ দুর্ঘটনা (helicopter crash in Phata of Kedarnath) ঘটে। এদিন কেদারনাথ ধামের ২ কিলোমিটার আগে ভেঙে পড়ে যাত্রী বোঝাই হেলিকপ্টারটি। জানা যায় এদিন ফাটা থেকে কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের নিয়ে রওনা দিয়েছিল একটি হেলিকপ্টারটি। খারাপ আবহাওয়ার কারণেই দুর্ঘটনা বলে অনুমান। এখনও পর্যন্ত ঘটনায় পাইলটসহ ৭ জনের মৃত্যুর খবর মেলে।  শুরু হয় উদ্ধারকার্য। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ এবং SDRF দল। সূত্রের খবর মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। এদিন সকাল ১১ টা ৪০ মিনিট নাগাদ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। স্থানীয়রা জানান, প্রথমে তাঁরা প্রবল জোরে একটি আওয়াজ শুনতে পান, পরে সেখানে এসে দেখেন একটি হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। ৬ যাত্রী ও কপ্টারের চালকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। 


এপ্রিলেই যাত্রা শুরু: গত ২৪ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়েছে কেদারযাত্রা। যদিও আবহাওয়া অত্যন্ত খারাপ উত্তরাখণ্ডের এই এলাকায়। তুষারপাতের জেরে রাস্তার হালও বেহাল। তবে খারাপ আবহাওয়ার হওয়া সত্ত্বেও চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। তুষারপাতের মধ্যেই ডোলিতে করে ভগবান কেদারনাথ পৌঁছন মন্দিরে। সমস্ত আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খুলেছে মন্দির। মন্দির সেজেছিল ফুল দিয়ে। ২০ কুইন্টাল ফুল ব্যবহার করা হয়েছিল মন্দির সাজাতে।'


এরই মধ্যে টানা তুষারপাতের জেরে এদিন থেকেই কেদারনাথ যাত্রার রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনা এড়াতেই এই পদক্ষেপ বলে গারওয়ালের প্রশাসনিক আধিকারিক নরেন্দ্র সিং কাবিরিয়াল জানান, ঋষিকেশ এবং হরিদ্বারের খারাপ আবহাওয়া এবং অতিরিক্ত তুষারপাতের জেরেই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কেদারনাথ যাত্রা স্থগিত করে দেওয়া হয়। শুধু একবার নয়, আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময়ে বারবারই বন্ধ হয়েছে যাত্রা।


টাটকা উত্তরাখণ্ডের স্মৃতি: অমরনাথের ঘটনা ২০১৩ সালের সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি অনেকের মনে ফিরিয়ে আনছে। তুমুল বৃষ্টিতে সে বার বানভাসি হয়েছিল উত্তরাখণ্ডের নটি জেলা। হড়পা বানের ধাক্কায় কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল কেদারনাথ। ব্যাপক ধস ও জলের তোড়ে কাতারে কাতারে মানুষ চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিলেন। বস্তুত উত্তর ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের তালিকায় নাম উঠেছিল ২০১৩ সালের ওই ঘটনার। যদিও সেটাই শেষ নয়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতেও ফের একই রকম আতঙ্কের আবহ ফেরে। সেবারও মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তুষারধস নামে উত্তরাখণ্ডে। প্লাবিত হয় অলকানন্দা ও ধৌলিগঙ্গা নদী। তাতে ধৌলিগঙ্গার দুটি নির্মীয়মাণ বাঁধে ফাটল ধরে, বান ডাকে জোশীমঠে। নির্মীয়মাণ ঋষিগঙ্গা ও তপোবন জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তুমুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহু মানুষের প্রাণহানির খবর মেলে। এছাড়াও একাধিক