শ্রীনগর: চারপাশ ঢেকে গিয়েছে বরফে, চলছে এক নাগাড়ে তুষারপাত। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সেনাকর্মীরা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন স্থানীয় এক সদ্য প্রসূতি ও তাঁর নবজাত সন্তানকে। কাশ্মীরের সোপরে ঘটেছে এই ঘটনা। এক হাঁটু বরফ ভাঙতে ভাঙতে কাঁধে করে ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে তাঁরা নিরাপদে হাসপাতাল থেকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সেনা জওয়ানরা বরফে ঢাকা পাহাড়ের ঢাল বেয়ে একটি স্ট্রেচারে করে ওই মা ও তাঁর সন্তানকে পাজালপোরার একটি হাসপাতাল থেকে দুনিওয়ারের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনা যখন ঘটে, তখন জম্মু কাশ্মীরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল শূন্যের নীচে। প্রচণ্ড তুষারপাতে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দমেনি ভারতীয় সেনা। বরফে ঢাকা সাড়ে তিন কিলোমিটার পাহাড় পাড়ি দিয়ে মা ও সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয় তারা। তবে জানা যাচ্ছে, এলাকার বাসিন্দারা এবং নার্সিং কর্মীরা সেনা কর্মীদের সাহায্য করেছেন।
গত ৩ দিন ধরে কাশ্মীরে প্রবল তুষারপাত চলছে। কাশ্মীর উপত্যকার সঙ্গে অবশিষ্ট দেশের সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, রাস্তাঘাট আটকে গিয়েছে বরফে, বিদ্যুৎ চলে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাশ্মীরের লাইফলাইন শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক। অত্যন্ত ব্যাহত হয়েছে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা, প্রশাসন প্রাণপণে চেষ্টা করছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাস্তার বরফ পরিষ্কার করে জনজীবন কিছুটা স্বাভাবিক করতে।
এর আগে মঙ্গলবার প্রায় এমনই একটি ঘটনায় সেনা কর্মীরা কুপওয়াড়ার করালপুরা থেকে এক অন্তঃসত্ত্বাকে খাটিয়ায় চড়িয়ে তাঁর বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে সহায়তা করা এক নার্সিং কর্মী। এ জন্য ২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় তাঁদের। কিছু পরে সেই মহিলা এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
২৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক কাশ্মীরকে অবশিষ্ট ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেছে। কিন্তু তুষারপাত ও ভূমিধসের জেরে এই রাস্তাটিও বরফে ঢাকা পড়েছে।