কলকাতা: দাউদ ইব্রাহিম কি মৃত? পাকিস্তানে দাউদকে (Dawood Ibrahim) কি বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে? এমন একাধিক প্রশ্ন নিয়ে দিনভর তুলকালাম ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু সোমবার সন্ধেয় সেই দাবি উড়িয়ে দিল আরেক সূত্র। বিভিন্ন গোপন সূত্র থেকে খবর, পুরোটাই গুজব, কিছুই হয়নি ভারতে মুম্বই হামলার মূলচক্রী দাউদ ইব্রাহিমের।
সকাল থেকে পাক মিডিয়া সূত্রের খবর ছিল, ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি দাউদ ইব্রাহিমকে বিষ (Dawood Ibrahim poisoning) দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় করাচির হাসপাতালে ভর্তি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ, এমন খবর সামনে আসে। কিন্তু সন্ধেয় সেই দাবি উড়িয়ে দিল আরেক সূত্র।
পাকিস্তানে (Pakistan) দাউদের একাধিক বাড়ি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তার মধ্যে অন্যতম করাচির ক্লিফটন রোডের বাড়ি। সেই বাড়ির রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। দাউদের বাড়ির কাছে অ্যাম্বুল্যান্স দেখা গিয়েছে বলেও পাক মিডিয়ার একাংশের দাবি ছিল। লাহৌর, করাচি, ইসলামাবাদের মতো শহরে কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছিল বলে খবর। পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সার্ভার ডাউন। কাজ করছে না এক্স, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম এমনটাও অভিযোগ ছিল। দাউদের খবর লুকোতেই সার্ভার ডাউন কি না, সেই সন্দেহও করা হয়েছিল।
কীভাবে এমন জল্পনা:
পাকিস্তানের এক ইউটিউবারের ভিডিও থেকে এমন জল্পনা শুরু। একটি ভিত্তিহীন সোশ্যাল মিডিয়া (unverified social media post) পোস্টের ভিত্তিতে এমন খবর করেন ওই ইউটিউবার। পাকিস্তানের একটি অংশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বা ইন্টারনেটের কোনও সমস্যা হয়েছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে দাউদের এই খবর মিলিয়ে একসূত্রে গেঁথেছিলেন ওই ইউটিউবার। যদিও গোটা বিষয়টি নস্যাৎ করা হয়েছে সূত্রের খবর। পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফের ভার্চুয়াল মিটিং বন্ধ করতেই নাকি এমন শাটডাউন করা হয়েছিল-বলে দাবি করা হয় পরে।
পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কক্কর। তাঁর নামের একটি X হ্য়ান্ডেল থেকে একটি পোস্ট করা হয়েছিল, সেখানে দাবি করা হয়েছিল দাউদ ইব্রাহিম বিষপ্রয়োগের কারণে মারা গিয়েছে। করাচির একটি হাসপাতালে দাউদ মারা গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল। পরে সেই ট্যুইটটি ভুয়ো বলে জানায় স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকার সংস্থার DFRAC. তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কক্করের আসল X হ্যান্ডেল নয় এটি। তারা জানায়, নামের বানানে ভুল রয়েছে।
১৯৫৫ সালে মুম্বইয়ে জন্ম দাউদ ইব্রাহিমের। বাবা পুলিশ কনস্টেবল ছিলেন। ডোংরি এলাকায় থাকত ওই পরিবার। সেখানে খুব কম বয়স থেকেই অপরাধ জগতে হাত পাকায় দাউদ। বিভিন্ন বেআইনি ব্যবসায় হাত পাকায়, তারপর ধীরে ধীরে মুম্বইয়ে অপরাধ জগতের বেতাজ বাদশা হয় দাউদ। সেই সময়ে মুম্বইয়ের গ্যাংওয়ারও মাথা ব্য়থার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল পুলিশের। পরে ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের পর দাউদকে ধরার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভারত ছেড়ে পালায় দাউদ। আন্তর্জাতিক জঙ্গি তকমা পাওয়ার পরেও পাকিস্তানে বহাল তবিয়তে রয়েছে দাউদ। বাড়িয়েছে ব্যবসাও। এর আগে দাউদের মৃত্যুর খবর এসেছিল, পরে যেগুলি ভুয়ো প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়ে তুমুল শোরগোল, লোকসভায় সাসপেন্ড অধীর-সহ ৩৩ বিরোধী সাংসদ