নিউ ইয়র্ক: অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবার এই সংস্থার সিইও-র পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তিনি এবার অ্যামাজনের এগজিকিউটিভ হিসেবে থাকবেন। অ্যামাজনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থার নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন অ্যান্ডি জ্যাসি।

অ্যামাজনের কর্মীদের উদ্দেশে এক চিঠিতে বেজোস জানিয়েছেন, ‘এই অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আমি অ্যামাজন বোর্ডের এগজিকিউটিভ চেয়ার পদে সরে যাব। অ্যান্ডি জ্যাসি সিইও হবেন। এগজিকিউটিভ চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আমি নতুন পণ্য ও দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার দিকে মন দেব। অ্যান্ডি সংস্থার অন্দরে অত্যন্ত পরিচিত। আমি যতদিন অ্যামাজনে আছি, ও প্রায় ততদিনই আছে। ও অসাধারণ নেতা হয়ে উঠবে। ওর উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমি অবসর নিচ্ছি না। সংস্থার হয়ে কাজ চালিয়ে যাব।’

১৯৯৪ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠা করেন বেজোস। শুরুতে এই সংস্থা অনলাইন বুকস্টোর ছিল। সেখান থেকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অনলাইন রিটেইলারে পরিণত হয়েছে এই সংস্থা। সারা বিশ্বে সব ধরনের পণ্য বিক্রি করে এবং মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয় এই সংস্থা। বেজোসের নেতৃত্বে গত বছরের জানুয়ারিতে এক লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছে অ্যামাজন। এই সংস্থার কর্মীর সংখ্যা এখন ১৩ লক্ষেরও বেশি।

৫৭ বছর বয়সি বেজোস বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৯৬.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এলন মাস্ক অবশ্য তাঁকে টপকে যান। এই দু’জনের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হওয়ার বিষয়ে প্রতিযোগিতা চলছে। বেজোসের হাত ধরে অ্যামাজনেরও আর্থিক বৃদ্ধি হয়েছে। বিশ্বজুড়ে করোনা অতিমারীর সময় অনলাইন শপিং অনেকগুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০১৯-এর তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ২০২০ সালে অ্যামাজনের বিক্রি ৩৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যায়। লাভের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ২১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যায়। এই পরিস্থিতিতে সিইও-র পদ থেকে সরে যাচ্ছেন বেজোস। তবে তিনি সংস্থার উন্নতির জন্য আরও উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

বেজোস অ্যামাজনের সিইও-র পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বাণিজ্য জগতের অনেকেই অবাক হয়েছেন। তবে শেয়ার বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। অ্যামাজনের শেয়ারের দর একইরকম রয়েছে।

এ বিষয়ে অ্যামাজনের চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার ব্রায়ান অলসাভস্কি জানিয়েছেন, ‘জেফ সংস্থা ছাড়ছে না। ও নতুন কাজের দায়িত্ব নিচ্ছে। বোর্ড অত্যন্ত সক্রিয়। অ্যামাজনের সাফল্যের পিছনে বোর্ডের অবদান রয়েছে।’