লন্ডন: দেহরক্ষীর সঙ্গে প্রেম। আর তা লুকিয়ে রাখার জন্য একের পর এক বিলাসবহুল উপহার। মুখ বন্ধ রাখতে নগদ টাকা। কিন্তু কোনও কিছুই লুকিয়ে রাখা গেল না ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে। দুবাইয়ের শাসক শেখ মহম্মদ অল মকতুমের ষষ্ঠ স্ত্রী তথা জর্ডনের রাজকুমারী হায়াকে নিয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ’গোপনে প্রেম রয় না ঘরে‘---- মতো তা পৌঁছয় আদালতের দরজায়।
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে,    ৪৬ বছরের রাজকুমারী হায়ার তাঁর ৩৭ বছরের ব্রিটিশ দেহরক্ষীর সঙ্গে প্রায় দুই বছর সম্পর্ক ছিল। আর এই সম্পর্ক গোপনে রাখতে তিনি জলের মতো অর্থ খরচ করেছেন উপহার হিসেবে।
লন্ডনের হাইকোর্টে শিশুদের হেফাজত সংক্রান্ত তথ্যানুসন্ধানে এই ঘটনার বিস্তারিত উঠে এসেছে, যাতে বলা হয়েছে. রাজকুমারী হায়া তাঁর এক পুরুষ দেহরক্ষীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, রাজকুমারী হায়া ও তাঁর ৭০ বছরের বিচ্ছিন্ন স্বামীর মধ্যে ব্রিটেনের হাইকোর্টে শুনানির সময় এই গোপন তথ্য সামনে এসেছে।
সন্তানদের হেফাজত মামলায় জিতেছেন হায়া। তিনি এখন পশ্চিম লন্ডনের কেনসিংস্টনে দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করেন।
২০১৯-এ হায়াকে না জানিয়েই তালাক দেন মহম্মদ বিন রশিদ আল মকতুম। চার বছরের বিয়ে ভেঙে গিয়েছে যুবরানির দেহরক্ষী তথা প্রেমিক রাসেল ফ্লাওয়ার্সেরও।
ওই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, দুবাইয়ের কোটিপতি শাসকের সবচেয়ে ছোট এবং ষষ্ঠতম স্ত্রী হায়ার সঙ্গে তাঁর দেহরক্ষী রাসেল ফ্লাওয়ার্সের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে । সময়ের হাত ধরে তা গভীর প্রেমে পরিণত হয়।খবর অনুযায়ী, হায়া চাইতেন তিনি যেখানেই যান তাঁর পাশে যেন সবসময় রাসেল থাকেন। বাইরে কোথাও গেলে, হায়া চাইতেন তিনি হোটেলের যে ঘরে থাকবেন সেটির সঙ্গে যেন সংযোগকারী একটি কক্ষ থাকে যেখানে রাসেল থাকবেন। লন্ডনে থাকার সময় প্রায় সব রাতে তাঁরা একসঙ্গে বেরিয়ে পড়তেন এবং ফিরতেন ভোরের দিকে। ২০১৬ সাল থেকে হায়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করছেন রাসেল। তার আগে পাঁচবছর তিনি প্রিন্সেস অব ওয়েলস রয়্যালস রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। হায়ার নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে তিনজন থাকলেও প্রথম থেকেই রাসেলকে পছন্দ করতেন হায়া। ভালোবাসার উপহার হিসেবে প্রথমে দামি রোলেক্স ঘড়ি উপহার দেন হায়া। ধীরে ধীরে উপহারের মাত্রা বা়ড়তে থাকে। ওদোমা পিকে-র মতো বিলাসবহুল ঘড়ি থেকে খোদাই করা একটি পারডি শটগান উপহারও দিয়েছিলেন যুবরানি। রাসেলের উপহারের ঝুলি ক্রমেই ভরে উঠতে থাকে। বদলাতে থাকে তাঁর আচার আচরণ। প্রথমে স্ত্রীয়ের চোখকে রাসেল ফাঁকি দিতে পারলেও পরে স্বামীকে সন্দেহ করতে শুরু করেন রাসেল-পত্নী। তিনি দেখতেন তাঁর স্বামী বাড়ি ফেরার পরেও রাতভর স্বামীর ফোনে মেসেজ আসতে থাকে। স্বামী যদিও তাঁর সম্পর্কের কথা স্ত্রীয়ের কাছে স্বীকার করেননি। স্বামীর বন্ধুরা রাসেলের স্ত্রীয়ের চোখ খুলে দেন।পরবর্তীতে রাসেলের স্ত্রী ঘটনা পরম্পরা থেকে নিশ্চিত হয়ে যান এই সম্পর্কের ব্যাপারে।


হায়া-রাসেল ২ বছরের ’ প্রেমকাহিনী‘ প্রায় ওপেন সিক্রেট হয়ে ওঠে। হায়া যে বিশাল প্রাসাদে থাকতেন তার সিসিটিভিতেও ধরা পড়ে যান রাসেল ও হায়া। রাত কাটিয়ে প্রাসাদে ঢোকার সময়ে ক্যামেরায় ধরা পড়েন তাঁরা। ২০১৭সালে স্ত্রীকে রাসেল জানিয়ে দেন তিনি আর তাঁকে ভালোবাসেন না। আদালতে গিয়ে পড়ে তাঁদের সম্পর্কে টানাপড়েন। আদালতে বলেছিল যে হায়া 'তাঁর একজন পুরুষ দেহরক্ষীর সঙ্গে ব্যভিচারী সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দু বছরের এই রোমান্সের কথা স্বামী জানতে পারার পর প্রাণের আশঙ্কায় দুই সন্তানকে নিয়ে হায়া লন্ডনের উড়ান ধরেছিলেন।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হারিয়ে রাসেল পত্নীও ভেঙে পড়েছিলেন। ভালোবাসার যে মানুষটিকে তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে চিনতেন, তিনি এমন করতে পারেন, তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি রাসেল স্ত্রী।