বেজিং: দেশের ছেলেপুলেগুলো বড্ড মেয়ে মেয়ে হয়ে যাচ্ছে। আর তা নিয়ে ভারী চিন্তিত হয়ে পড়েছে চিনা শিক্ষা মন্ত্রক। এ নিয়ে এক নোটিস জারি করেছে তারা, তাতে বলেছে, ছেলেদের এই মেয়েমার্কা হাবভাব পাল্টাতে স্কুলের পাঠ্যক্রম পাল্টে ফেলতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রক ওই নোটিসে বলেছে, শারীরিক কসরতকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে সেইমত নিযুক্ত করতে হবে শিক্ষকদের। এ জন্য প্রাক্তন খেলোয়াড় ও খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত লোকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে আর ফুটবলের মত বডি কনট্যাক্ট গেমে বেশি জোর দিতে হবে। এতে ছেলে ছোকরাদের মধ্যে ‘পৌরুষ’ জন্ম নেবে বলে তারা মনে করছে। এছাড়া ছেলেরা যেন বেশি লজ্জা টজ্জা না পায়, সে দিকেও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই নোটিসে।

চিনা শিক্ষা মন্ত্রকের এই নোটিস সামনে আসতে সমালোচনায় মুখর হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ইউজাররা এই নোটিস লিঙ্গবৈষম্যে উসকানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ছেলেরাও মানুষ, তাঁরাও ভাবুক, সংবেদনশীল হতে পারেন। এটা মানবিক বিশেষত্ব। আবার অনেকে বলছেন, চিনা সরকারের এই নীতি মেয়েদের পক্ষে অপমানজনক। একজন বলেছেন, এ দেশে মহিলাদের সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় অস্বাভাবিক কম। বিশ্বের অন্য কোনও দেশে লিঙ্গ অনুপাত এত খারাপ নয়। এও কি পৌরুষ প্রমাণে যথেষ্ট নয়? কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় চিন সরকার। বেশ কয়েক বছর ধরেই তাদের মনে হচ্ছে, নতুন প্রজন্মের ছেলেদের মধ্যে পৌরুষের পরিমাণ যথেষ্ট কম। তাদের বক্তব্য, দেশের রোল মডেলদের আজকাল একেবারেই মজবুত, শক্তপোক্ত বলে মনে হয় না, তাঁরা কেউ বডিবিল্ডার নন, সব হালকা পলকা, নরম সরম। এঁদের দেখে দেখেই এখনকার ছেলেপুলেরা মাটির দিকে চেয়ে এঁকেবেঁকে হাঁটছে আর আকাশের দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে কবিতাটবিতা লিখছে।

চিন সরকার দীর্ঘদিন ধরে দেশের রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরে আসছে শক্তপোক্ত পুরুষ, খেলোয়াড় ও সেনা জওয়ানদের। কিন্তু তাতেও যুব সমাজের মধ্যে যথেষ্ট পৌরুষের স্ফূরণ হচ্ছে না বলে তারা মনে করছে।