বেজিং: বিয়ের কথা ভাবছেন? যাঁকে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেছেন, তাঁর অপরাধ বা পরিবারের কারও উপর অত্যাচারের অতীত রেকর্ড আছে কি না, সেটা জেনে নেওয়া যাবে। পূর্ব চিনের ইবু শহরের প্রশাসন এ বিষয়ে একটি তথ্যপঞ্জি তৈরি করতে চলেছে। ১ জুলাই থেকে এই ডেটাবেসে দেশজুড়ে অপরাধীদের বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে। ২০১৭ থেকে পারিবারিক হিংসার দায়ে যাদের সাজা দেওয়া হয়েছে বা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়ে তথ্য থাকবে এই ডেটাবেসে।  

ইবু শহরের মহিলাদের সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান ঝাউ ড্যানইং জানিয়েছেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ের পরে পারিবারিক হিংসার বিষয়টি জানা যায়। এই ডেটাবেস তৈরি করা হয়েছে মানুষের সেই অসুবিধার কথা ভেবেই। এখন বিয়ের আগেই সঙ্গীর চরিত্র জানা যাবে। এরপর কেউ বিয়ে করবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।’

এই প্রথম চিনে এই ধরনের ডেটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। যাঁরা এই ডেটাবেসের মাধ্যমে হবু স্বামী বা স্ত্রীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে। যিনি তথ্য চাইছেন, তাঁর পরিচয়পত্র, সঙ্গীর পরিচয়পত্র এবং বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য আবেদনের কপি দিতে হবে। এ বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখার বিষয়েও সম্মত হতে হবে। যদি কেউ এই তথ্য দেখার পর বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও কাজে সংশ্লিষ্ট তথ্য ব্যবহার করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।একজন ব্যক্তি বছরে দু’বার দু’জন আলাদা ব্যক্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে পারবেন।

চিনে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোখার জন্য লকডাউন জারি হওয়ার পর পারিবারিক হিংসা বেড়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেই ইবু সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অনেকেই পারিবারিক হিংসার শিকার হওয়া সত্ত্বেও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন না। আদালতেও অনেক সময় অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। পুলিশও আবার অনেক সময় অভিযোগ নিতে চায় না। ফলে ইবু প্রশাসনের এই উদ্যোগ কতটা সফল হবে, সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে।

২০১৬ সালে চিনে প্রথমবার পারিবারিক হিংসা রোখার জন্য আইন পাশ হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও পারিবারিক হিংসা বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি পাশ হওয়া দেওয়ানি বিধিতে দম্পতিদের ৩০ দিনের কুল অফ পিরিয়ডের কথা বলা হয়েছে। অনেকেই এই আইনের সমালোচনা করছেন। তবে সরকারের দাবি, পারিবারিক হিংসা রোখার জন্যই এই বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে।